

‘উদ্বেগজনক’ সিদ্ধান্ত নিয়ে এবার সরাসরি মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে কড়া ভাষায় চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের অভিযোগ— নির্বাচনকে ঘিরে কিছু পদক্ষেপ রাজনৈতিক চাপেই করা হচ্ছে, যা ভোটপ্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে।

চিঠিতে মমতা দু’টি সিদ্ধান্তের বিষয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছেন—
(১) সদ্য প্রকাশিত রিকোয়েস্ট অফ ফর্ম অনুযায়ী রাজ্যের সিইও দফতরের তরফে বাইরে থেকে ১,০০০ ডেটা এন্ট্রি অপারেটর এবং ৫০ জন সফটওয়্যার ডেভেলপার নিয়োগের উদ্যোগ
(২) বেসরকারি আবাসন কমপ্লেক্সের ভিতরে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব

‘জেলায় দক্ষ কর্মী থাকতেও বাইরে থেকে কেন নিয়োগ?’
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, এতদিন ডেটা এন্ট্রি সংক্রান্ত জরুরি কাজের জন্য জেলা প্রশাসনই প্রয়োজনমতো অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করত। বর্তমানে BSK কর্মী এবং চুক্তিভিত্তিক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের মাধ্যমে কাজও চলছে স্বাভাবিকভাবেই।

তা হলে হঠাৎ করেই সিইও দফতরের পক্ষ থেকে আলাদা করে বছরভর বিপুল সংখ্যক কর্মী নিয়োগের দরপত্র কেন? কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের স্বার্থ হাসিল করতেই কি এই প্রক্রিয়া?— এমনই প্রশ্ন তুলেছেন মমতা।
তাঁর বক্তব্য, “যে দায়িত্ব এতদিন জেলা স্তরের অফিসেরা সামলাত, তা হঠাৎ করে কেন্দ্রীয়ভাবে সিইও দফতর কেন নিতে চাইছে? কেন কেন কেন?” এই সিদ্ধান্তকে তিনি ‘সময়সূচি ও উদ্দেশ্য— দুটোই সন্দেহজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
বেসরকারি হাউসিংয়ে ভোটকেন্দ্র—‘নীতি ও নিরপেক্ষতার পরিপন্থী’
চিঠিতে আরও তীব্র আপত্তি রয়েছে বেসরকারি আবাসন কমপ্লেক্সের ভিতরে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র বসানো নিয়ে। মমতার যুক্তি— ভোটকেন্দ্র সবসময় সরকারি বা আধা-সরকারি ভবনে স্থাপিত হওয়াই নিয়ম। এতে জনসাধারণের সমান প্রবেশাধিকার নিশ্চিত হয়।

বেসরকারি প্রাঙ্গণ ব্যবহারে প্রশ্ন উঠতে পারে নিরপেক্ষতার। ‘সুবিধাভোগী’ বনাম ‘অসুবিধাভোগী’— এই বিভাজন তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, “এ ধরনের সিদ্ধান্ত সরাসরি বৈষম্য তৈরি করবে। কোনও রাজনৈতিক দলের স্বার্থ রক্ষায় কি এ সব করা হচ্ছে?”

https://x.com/MamataOfficial/status/1992902489524613430?t=DRfxKeOsMh0lYv6M_6wJQQ&s=19
‘নির্বাচন কমিশনের মর্যাদা অটুট রাখুন’
চিঠির শেষে কমিশনের শীর্ষ কর্তাদের উদ্দেশে আবেদন রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, এই দু’টি বিষয়ে অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্ত ও পুনর্বিবেচনা করা হোক। নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি যেন কোনওভাবেই ক্ষুণ্ণ না হয়। মমতার কথায়, “কমিশনের মর্যাদা, স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা সর্বোচ্চ। কোনও পরিস্থিতিতেই তা বিপন্ন হওয়া উচিত নয়।”

কমিশনকে আক্রমণ করে মমতার বক্তব্য, ‘এই সিদ্ধান্তও কি নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলের চাপে করা হচ্ছে? কেন? কেন? কেন? এই ধরনের সিদ্ধান্ত নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতাকে বিঘ্নিত করবে।’ দু’টি বিষয় নিয়ে কমিশন দ্রুততার সঙ্গে যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিক বলে চিঠিতে আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।



