দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষক সম্মান যোজনায় গোটা দেশের ৯ কোটি চাষী ১৪ হাজার টাকা করে পেয়েছে বলে জানাচ্ছিলেন কেন্দ্রের মন্ত্রীরা। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী খেদের সঙ্গে জানিয়েছেন, একমাত্র বাংলায় এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন করেনি সেখানকার সরকার। ফলে বাংলার চাষীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

পরিস্থিতি যখন এরকমই তখন রাজ্যের ২১ লক্ষ ৭৯ হাজার কৃষক অনলাইনে কেন্দ্রের কাছেই প্রকল্পের সুবিধা চেয়ে আবেদন জানান। এই অবস্থায় শেষমেশ কৃষক সম্মান যোজনায় সম্মতি দিল রাজ্য সরকার। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে নিজেই এ কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্রের সব প্রকল্প রাজ্যের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। আমরাও তাই চেয়েছিলাম। কেন্দ্রের কৃষি মন্ত্রীকে আমি ফোনও করেছিলাম। কিন্তু উনি বলেন, আমরা ডাইরেক্ট করতে চাই। তখনই বুঝে যাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। সে থাকুক। ভোটের বছর। এখন সকালে বিকেলে দুপুরে রাতে বাংলার কথা প্রধানমন্ত্রীর মনে পড়ছে। তবে কৃষকরা যদি টাকা পায় তো ভাল।”

কিষাণ সম্মান প্রকল্প খাতে কৃষকদের বছরে ৬ হাজার কোটি টাকা করে দেয় কেন্দ্র। দু’বছরে হয় ১২ হাজার টাকা। সেই সঙ্গে কোভিডের সময়ে অতিরিক্ত আরও ২ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল মোদী সরকার। কিন্তু আয়ুষ্মান ভারত যোজনার মতোই বাংলায় এই প্রকল্পের রূপায়ন করেনি রাজ্য সরকার।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে স্রেফ রাজনৈতিক কারণে এই প্রকল্প আটকে রেখেছেন সেই অভিযোগ তুলেছেন অমিত শাহ থেকে জেপি নাড্ডা। সেই সঙ্গে বিজেপি সভাপতি অভিযোগ করেছেন, “রাজ্য নিজের হাতে টাকা চাইছে। তার মানে কী? কাটমানি!”

এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রের কৃষি মন্ত্রী তাঁকে চিঠি লিখে বলেছেন, সেন্টারের পোর্টালে ২১.৭৯ লক্ষ কৃষক তাঁদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। তাঁদের নাম যেন ভেরিফিকেশন করে দেয় রাজ্য। তাঁর কথায়, “ভেবে দেখুন, রাজ্যের পোর্টালে কিন্তু নাম নেই। তবে আমি বলেছি, ভেরিফিকেশন করে দেব।”

মুখ্যমন্ত্রী এদিন বোঝাতে চান, রাজ্য সরকার যে কৃষি বন্ধু প্রকল্প চালু করেছে তাতে ছোট কৃষকরাও বছরে এক-দেড় হাজার টাকা করে পান। কিন্তু কেন্দ্রের প্রকল্পের সুবিধা পাবেন শুধু বড় চাষীরা, যাঁদের ২ একর বা ৬ বিঘা জমি রয়েছে।

নবান্নে এই ঘোষণা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এদিন বিজেপি মুখপাত্র সায়ন্তন বসু বলেন, “এ হল ঠ্যালার নাম বাবাজি। আজকের যুগে কোনও কিছু লুকিয়ে রাখা যায় না। বাংলার চাষীরা জেনে গেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্রেফ রাজনীতি করতে গিয়ে তাঁদের কেমন করে ঠকাচ্ছেন। তাঁরা সরাসরি কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছেন। এ বার সেই ঠ্যালাতেই কাজ হল! ভাগ্যিস ভোট এসেছিল, নইলে এর পরেও চুপ করে থাকত নবান্ন।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here