দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে বাংলার বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু—প্রায় সকলেই বলেছেন সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করছে, তারা কেন পাকিস্তান নিয়ে চুপ। শুক্রবার শিলিগুড়ির মিছিল শুরুর আগে সেই পাকিস্তানকে হাতিয়ার করেই নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মমতা বলেন, “কিছু বললেই বলছে পাকিস্তানে চলে যাও। আমাদের এত বড় গণতন্ত্র। পাকিস্তানের কথা কেন বলব? হিন্দুস্থানের কথা বলব। আপনি কি পাকিস্তানের অ্যাম্বাসেডর নাকি? নিজের দেশকে নিয়ে কোনও কথা নেই। শুধু পাকিস্তান নিয়ে কথা।”
বৃহস্পতিবার দু’দিনের কর্নাটক সফরে গিয়েছেন মোদী। সেখানে তিনি একাধিক সভায় ভাষণ দেবেন। গতকাল তিনি শ্রী সিদ্দাগঙ্গা মঠে বলেন, “আপনাদের যদি স্লোগান দিতেই হয়, তাহলে পাকিস্তানের অত্যাচারিত সংখ্যালঘুদের নিয়ে দিন। যদি মিছিল বার করেন, পাকিস্তান থেকে পালিয়ে আসা উদ্বাস্তুদের সমর্থনে করুন। যদি গলা তুলতে হয়, পাকিস্তান ৭০ বছর ধরে যে অন্যায় করে আসছে, তার বিরুদ্ধে তুলুন।” এখানেই থামেননি মোদী। বিরোধীদের উদ্দেশে তাঁর তোপ, “পাকিস্তানের জন্মই হয়েছিল ধর্মের ভিত্তিতে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা সেদেশে নিপীড়িত হন। সেজন্য তাঁরা ভারতে চলে আসেন। কিন্তু কংগ্রেস ও তার বন্ধুরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কিছু বলে না। তারা কেবল উদ্বাস্তুদের বিরুদ্ধে মিছিল বার করছে।”
এদিন মমতা বলেন, “প্রশ্ন করছি খাবার কই? চাকরি কই? নাগরিকত্ব কই? বলছে পাকিস্তানে চলে যাও। কেন যাব? এটা আমাদের দেশ। আমি এই দেশের কথা বলব।” তিনি আরও বলেন, “স্বাধীনতার ৭০ বছর পর আমাদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে? এটা মানবতার লজ্জা!”
পর্যবেক্ষকদের মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে বিরোধীদের জুড়ে দিয়ে নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি মেরুকরণের মাত্রাকেই তীব্র করতে চেয়েছেন। এদিন মমতা সেটার বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন। বোঝাতে চাইলেন, বিজেপি আসলে সাধারণ মানুষের আশু সমস্যাগুলি থেকে নজর ঘোরাতেই বারবার পাকিস্তানের কথা টেনে আনে। নিজের দেশ নিয়ে কোনও কথা নেই।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও একবার স্পষ্ট করেন, বাংলায় এনআরসি, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনপিআর—এর কোনওটারই বাস্তবায়ন হবে না। সেইসঙ্গে জানিয়ে দেন, তাঁর আন্দোলন চলবে। আগামী ৯ জানুয়ারি বারাসত থেকে মধ্যমগ্রাম চৌমাথা পর্যন্ত মিছিল করবেন বলেও ঘোষণা করেন মমতা।