দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আগামীকাল ৭ডিসেম্বর সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর কলেজ মাঠে জনসভা করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সভা ঘিরে চূড়ান্ত ব্যস্ততা পুলিশ প্রশাসনের। ইতিমধ্যেই পদস্থ পুলিশ কর্তারা সভাস্থল ঘুরে দেখছেন। তৈরি করা হচ্ছে মঞ্চ। জনসভার সমর্থনে শনিবার বিকেলে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলায়, খড়্গপুরে সভা করল তৃণমূল। ওই জনসভায় বক্তব্য পেশ করেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, তৃণমূলের খড়্গপুর দুই ব্লকের সভাপতি তৃষিত মাইতি–সহ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা।
শনিবার ওই জনসভায় রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র তাঁর ভাষণে বলেন, ‘রাজ্যজুড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। রাজ্য সরকারকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে বাধা দিচ্ছে। ওরা বাংলাকে গুজরাট বানাতে চায়। কিন্তু বাংলা বাংলাই থাকবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতদিন থাকবেন ততদিন হাজার চেষ্টা করেও ওরা বাংলাকে গুজরাট বানাতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘সোমবার মেদিনীপুর কলেজ মাঠ জনসমুদ্রে পরিণত হবে। তাই তিনি ওই এলাকার সর্বস্তরের মানুষকে তাঁর বক্তব্য শোনার জন্য মেদিনীপুর কলেজ মাঠের জনসভায় সকলে শামিল হওয়ার জন্য আহ্বান করেন। ৩৪ বছরের বাম সরকারকে সরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মা–মাটি–মানুষের সরকার গঠিত হয়েছে। মমতার সরকার রাজ্যের উন্নয়নে কাজ করেছে। সারাদেশের কোনও রাজ্য সে কাজ করেনি। অথচ বিজেপি নেতারা মা–মাটি–মানুষের সরকারের নেত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার করে চলছে। বাংলার মানুষ বিজেপি–র এই মিথ্যাচারের যোগ্য জবাব দেবেন।’
এখন প্রশ্ন হল,শুভেন্দু কি আজ কিছু বলতে পারেন?
গত মঙ্গলবারে তৃণমূলের বৈঠকের কথা মনে পড়ে! ওই যে মিটিংয়ের পর দলের প্রবীণ সাংসদ গড় গড় করে বলে দিয়েছিলেন, শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলেই রয়েছেন। দল ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। পর দিন শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হল, যা বলার তা ৬ তারিখ, রবিবার ‘দাদা’-রই বলার কথা ছিল। সৌগতবাবু শর্ত ভেঙেছেন। এর পর আর একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয় বলে তাই প্রবীণ সাংসদকে টেক্সট করে জানিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু।
একটি সূত্রের দাবি, ওই বৈঠকে সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়রা শুভেন্দুকে অনুরোধ করেছিলেন ৭ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় তিনি যেন উপস্থিত থাকেন। তারই জবাবে শুভেন্দু জানিয়েছিলেন, তিনি আগের দিন অর্থাৎ ৬ তারিখ তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করবেন। সংবাদমাধ্যমকেও যা বলার তা রবিবার বলবেন।
শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হচ্ছে, ওই বৈঠকে ৬ তারিখের যে কথা উঠেছিল তার আর কোনও প্রাসঙ্গিকতা নেই। কারণ, যা বলার তা বৈঠকের পর দিন তথা বুধবারই সৌগত রায়কে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল—‘একসঙ্গে কাজ করা আর সম্ভব নয়।’ ফলে নতুন করে আর তা বলার দরকার নেই।
পর্যবেক্ষকরাও মনে করছেন, শুভেন্দুর তৃণমূল থেকে ইস্তফা এখন সময়ের অপেক্ষা। এর আগে হুগলি রিভারব্রিজ কমিশনের চেয়ারম্যান পদ থেকে এক প্রকার নিঃশব্দে ইস্তফা দিয়েছিলেন শুভেন্দু। তার ৪৮ ঘন্টা পর ২৭ নভেম্বর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। দুটি ঘটনাতেই সংবাদমাধ্যম আগে থেকে কোনও ইঙ্গিত পায়নি।
তবে জল্পনা থেমে নেই। তৃণমূলের বিধায়ক পদ থেকে তিনি কবে ইস্তফা দিতে পারেন তা নিয়ে আলোচনা চলছে রাজ্য রাজনীতিতে। অনেকে মনে করছেন, কাল সোমবার মেদিনীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা শেষ হতেই ইস্তফা দিতে পারেন তিনি। কারও কারও মতে শুভেন্দু তলে তলে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে হয়তো তিনি ইস্তফা দেবেন। তাঁর ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তার আগে দল বা সরকারের সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করবেন না তিনি।