দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ গড়পড়তা ফেস মাস্কের থেকে এটি অনেক আলাদা। এই মাস্ক যেমন ভাইরাস মারবে, তেমনই বাতাসের বিশুদ্ধ অক্সিজেন ছেঁকে পাঠাবে ফুসফুসে। এমন অভাবনীয় আবিষ্কার করে ফেলেছে বর্ধমানের মেমারির মেয়ে দিগন্তিকা বোস। তার তৈরি ডিটরেন্ট ইনহেলার মাস্ককে সেরা দশ আবিষ্কারের তালিকায় প্রথমেই রেখেছে গুগল আর্ট অ্যান্ড কালচার।
মেমারির বিদ্যাসাগর স্মৃতি বিদ্যামন্দির স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিগন্তিকা। গত বছর লকডাউনের সময়েই এই ডিটরেন্ট ইনহেলার মাস্ক তৈরি শুরু করেছিল সে। গত বছরই দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের অধীনস্থ ন্যাশনাল ইনোভেশন ফাউন্ডেশন (এনআইএফ)-এর একটি প্রতিযোগিতায় দিগন্তিকার তৈরি মাস্ক সাড়া ফেলে দেয়। এই মাস্কের কার্যকারিতা দেখে সেটিকে সার্বিকভাবে ব্যবহার করার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কাছে আবেদনও জানানো হয়। এনআইএফ জানায়, এমন মাস্ককে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে তা যেমন জীবাণু প্রতিরোধী হবে, তেমনি ইনহেলারের মতোও কাজ করবে।
দিগন্তিকার কথায়, এই মাস্কের দুটি কাজ। এক, ভাইরাস ধ্বংস করা। দুই, বাতাসের ধুলোবালি, জীবাণু ছেঁকে বিশুদ্ধ অক্সিজেন শরীরে ঢোকানো। তার জন্য এই মাস্কের ভালভের সঙ্গে দুটি চেম্বার লাগানো আছে। একটি চেম্বারের কাজ হল ভাইরাস নষ্ট করা। শ্বাসের সময় যে বাতাস আমরা টেনে নিচ্ছি তার মধ্যে কোনও ভাইরাস পার্টিকল থাকলে সেটা ফিল্টার হয়ে শুদ্ধ বাতাস ভেতরে ঢুকবে। এই ফিল্টার এমনভাবে তৈরি যাতে এর সংস্পর্শে এলেই ভাইরাসের প্রোটিন নষ্ট হয়ে যাবে। আর দ্বিতীয় চেম্বারের কাজ হল, ফুসফুস থেকে বের হওয়া বাতাসকে পরিশুদ্ধ করা। হাঁচি, কাশি বা শ্বাসের সঙ্গে যে বাতাস বের হচ্ছে তার মধ্যে যদি ভাইরাস ড্রপলেট থেকে যায় তাহলে সেটা দ্বিতীয় চেম্বারের ফিল্টারে আটকে গিয়ে নষ্ট হয়ে যাবে।
দিগন্তিকা আরও জানিয়েছে, প্রায় এক সপ্তা লেগেছিল এই মাস্কের প্রোটোটাইপ তৈরি করতে। সাধারণ মাস্কের চেয়ে এটি অনেক কার্যকরী হবে বলে দাবি করেছে দিগন্তিকা। এই মাস্কের আরও একটা সুবিধা হল, এটি পরলে কানে ব্যথা হবে না। সাধারণ মাস্কের ব্যান্ড যেমন কানে চেপে বসে এটিতে তেমন ব্যবস্থা নেই। অনেকটা হেড-ব্যান্ডের মতো। কানের স্ট্র্যাপের সঙ্গে যুক্ত থাকবে এবং মাথার পেছন দিয়ে ঘুরে আটকে থাকবে। এর ইনহেলার সিস্টেম শ্বাসপ্রশ্বাসে সাহায্য করবে, কাজেই নাক-মুখে অস্বস্তি হওয়ারও ভয় নেই। গুগল আর্ট অ্যান্ড কালচারের সেরা দশ আবিষ্কারের মধ্যে এখন জ্বলজ্বল করছে বাংলার মেয়ে দিগন্তিকার কীর্তি।