দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গতকাল উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে যাওয়ার পথে আটকানো হয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়াকে। তাঁদের গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে। পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিও হয় কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের। এবার একই দৃশ্য দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলের ক্ষেত্রেও। তাঁদেরও আটকে দেওয়া হল হাথরাস ঢোকার আগেই। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে মাটিতে পড়ে গেলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন।
গতকালই হাথরাসের ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর শুক্রবার সকালেই তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল হাথরাসের উদ্দেশে রওনা দেয়। এই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার ও প্রতিমা মণ্ডল এবং প্রাক্তন সাংসদ মমতা ঠাকুর।
জানা গিয়েছে, দিল্লি থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার যাত্রা করার পরে হাথরাস ঢোকার মুখে ঠিক দেড় কিলোমিটার আগে থামিয়ে দেওয়া হয় এই প্রতিনিধি দলকে। সেখানে উপস্থিত রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। তৃণমূল প্রতিনিধিরা পুলিশকে জানান, তাঁরা শুধুমাত্র নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে ও তাঁদের সমবেদনা জানাতে যাচ্ছেন। কিন্তু তাতেও যাওয়ার অনুমতি তাঁদের দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ।
তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের তরফে জানানো হয়েছে, “আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে হাথরাসে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে ও তাঁদের সমবেদনা জানাতে যাচ্ছিলাম। সব নিয়ম মেনে আলাদা আলাদা ভাবে আমরা যাত্রা করছিলাম। আমাদের হাতে অস্ত্রও ছিল না। তাহলে আমাদের কেন আটকানো হল? এটা কী ধরনের জঙ্গল রাজ যেখানে একটি নির্যাতিত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগে সাংসদদের আটকে দেওয়া হচ্ছে। আমরা এই মুহূর্তে নির্যাতিতার বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে রয়েছি। আমরা পুলিশকে জানিয়েছিলাম হেঁটেই যাব। তাও যেতে দেওয়া হয়নি।”
Is this a #democracy?@AITCofficial MPs have been heckled,female MPs being manhandled,@derekobrienmp being pinned down on the floor when all they wanted to do was meet the family of #manisha_valmiki!
— Banglar Gorbo Mamata (@BanglarGorboMB) October 2, 2020
This is absolutely unacceptable & strict action must be taken against @Uppolice pic.twitter.com/iWUK9alhJr
সূত্রের খবর, পুলিশের বাধা টপকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশে সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের। তাতে মাটিতে পড়ে যান রাজস্যভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন। এই ঘটনার পরে রাস্তাতেই বসে পড়েন তৃণমূল প্রতিনিধিরা। সেখানেই তাঁরা শুরু করেছেন ধর্না। সব মিলিয়ে আজও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে সেখানে।
গতকাল জানা যায়, প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী ও কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার বিরুদ্ধে মহামারী আইনে মামলা করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। বৃহস্পতিবার পুলিশের বাধায় হাথরাসে মৃত দলিত তরুণীর বাড়িতে যেতে পারেননি প্রাক্তন রাহুল গান্ধী ও প্রিয়ঙ্কা। উত্তরপ্রদেশের গ্রেটার নয়ডায় তাঁদের আটকায় পুলিশ।
এদিকে হাথরাস কাণ্ড নিয়ে শুক্রবার উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন ও পুলিশের শীর্ষস্থানীয় অফিসারদের ডেকে পাঠিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। হাইকোর্টের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বললেন, এতদিনে আশার আলো দেখা দিয়েছে। হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে তা ‘কঠোর এবং উৎসাহব্যঞ্জক’।