দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কয়েক দিন আগেই সামনে এসেছিল, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানচিত্রে চিনের অংশে ঢুকে গিয়েছে ভারতের লাদাখের একাংশ। জানা গেছিল, চিনের ম্যাপে তেমনটাই রয়েছে। অর্থাৎ ওই অংশটিকে, যা আকসাই চিন নামে পরিচিত, তাকে নিজের অংশ হিসেবে দেখিয়েই মানচিত্র তৈরি করেছে তারা। বড় বিতর্ক ঘনিয়েছিল তখন। ফের একই কাণ্ড ঘটাল চিন। এবার তার আগ্রাসী মনোভাবের অস্ত্র হয়ে উঠল এভারেস্ট শৃঙ্গ।
চিনের সরকারি খবরের চ্যানেল সিজিটিএন মাউন্ট এভারেস্টের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে এদিন। তিব্বতের দিকের মাউন্ট এভারেস্টের মাথায় সূর্যরশ্মির অপূর্ব বলয় দেখা গিয়েছে সে ছবিতে। ছবিটি যে অপূর্ব সুন্দর, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু সমস্যা বাঁধিয়েছে তার ক্যাপশন। চিন ওই ছবির ক্যাপশনে লিখেছে, “সূর্যের এক অদ্ভুত বলয় দেখা গিয়েছে মাউন্ট কোমোলাংগমার মাথায়, যা মাউন্ট এভারেস্ট নামেও পরিচিত। তার ওপরের আকাশে এ দৃশ্য দেখা যায়। এটা চিন-তিব্বত স্বশাসিত অঞ্চলে অবস্থিত বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ৷”
In pictures📸: An extraordinary sun halo was spotted on May 1 in the skies over Mount #Qomolangma, the world's highest peak located on the China-Nepal border pic.twitter.com/TMEY5aT4yl
— CGTN (@CGTNOfficial) May 10, 2020
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৯৬০ সালে নেপাল ও চিনের মধ্যে যে চুক্তি সাক্ষরিত হয়, তাতে মাউন্ট এভারেস্টকে দুই দেশের মধ্যে ভাগ করা হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল, শৃঙ্গের দক্ষিণ অংশটি থাকবে নেপালের অধিকারে, আর উত্তর দিক থাকবে চিন-তিব্বত স্বশাসিত অঞ্চলের আওতায়। যদিও সেই অংশকেও বরাবরই নিজেদের বলে দাবি করে এসেছে চিন।
বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, এটা নতুন কিছু নয়। চিন বরাবরই তিব্বত ও এভারেস্টের দখল পেতে মরিয়া। এর পেছনে ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিও কাজ করে। চিনের দিকের এভারেস্টের অংশ অর্থাৎ নর্থ কল আরোহণের জন্য বেশ কঠিন। তাই নেপালের দিকের অংশ অর্থাৎ সাউথ কল বেশি ব্যবহৃত হয় অভিযাত্রীদের আরোহণের জন্য। পর্যটন ব্যবসাও হয় মূলত ওই রুটটি থেকেই। সেই ব্যবসাও নিজেদের দিকে আনতে চাইছে চিন। প্রমাণ করতে চাইছে, মাউন্ট এভারেস্ট তাদেরই দেশের শৃঙ্গ।
পাশাপাশি সম্প্রতি এভারেস্টে ৫জি নেটওয়ার্ক পরিষেবা চালু করেছে চিন। পর্বতারোহীদের বাকি বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার উদ্দেশ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। ফলে এভারেস্ট জয় পর্বতারোহীদের জন্য আগের থেকে অনেক সুরক্ষিত হবে বলে দাবি চিনের। কিন্তু এসবের আড়ালে চিন আদতে হিমালয়ে বা আরও নির্দিষ্ট করে বললে এভারেস্টে কর্তৃত্ব কায়েম করতে চাইছে বলেই মত অনেকের।