দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সোমবার বিকেলে রানাঘাটে বিজেপির মঞ্চ থেকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় একপ্রস্থ বলেছিলেন। সন্ধ্যায় শ্রীরামপুরে সরস্বতী পুজোর উদ্বোধন করতে গিয়ে বাম যুবকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় কার্যত ফুঁসে উঠলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন পুজো উদ্বোধনের পর সাংবাদিকরা তাঁকে নবান্ন অভিযানে মার খাওয়া ডিওয়াইএফআই নেতা মইদুল ইসলাম মিদ্যার মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “এই ঘটনা রাজ্য সরকারের নৃশংসতা ও বর্বরতার প্রমাণ। এর থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর মদতপুষ্ট পশ্চিমবঙ্গে গণতান্ত্রিক সরকার। এর কোনও বিকল্প নেই।”
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, “পরিবারের কেউ যদি চাকরি করতে চায় তাহলে আমরা তার ব্যবস্থা করতে পারি।” এ ব্যাপারে শুভেন্দু তীব্র আক্রমণ শানান মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। তাঁর কথায়, “এটা যদি ঘটনাচক্রে ঘটে যেত তাহলে আলাদা কথা। কিন্তু এখানে সংগঠিত ভাবে পিটিয়ে মারা হয়েছে। পরিবারের একজনকে চাকরি দেব বললেই কি দায় এড়ানো যায়?”
এখানেই থামেননি নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেতা। তারপর তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক ভাবে চাকরি চাইতে এসেছিল ছেলেমেয়েরা। জল কামান চালিয়ে, গ্যাস ফাটিয়ে পুলিশ অনেক ভাবেই সরিয়ে দিতে পারত। কিন্তু মাটিতে ফেলে পিটিয়ে পিটিয়ে মারা, এ তো কোনও সভ্য দেশে হয় না।”
তাঁর কথায়, “নন্দীগ্রাম আন্দোলনে গুলি চালানো দেখিয়ে ক্ষমতায় এসে নবান্নের দরজায় যুবককে পিটিয়ে মারা, এ জিনিস হতে পারে না। যদি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিত, তাহলে বোঝা যেত সরকার পেটাতে বলেনি। কিন্তু কলকাতার নবনিযুক্ত কমিশনার সরকারের গুডবুকে যাওয়ার জন্য এটা করিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হলে বুঝতাম। চাকরি দেওয়াটা সমাধান নয়।”
মুখ্যমন্ত্রীর চাকরির প্রস্তাবের খবর ইতিমধ্যেই মিদ্যার পরিবারে পৌঁছেছে। স্বামীকে হারানো স্ত্রী আলেয়া বিবি দুই শিশুকন্যাকে পাশে বসিয়ে দাবি জানিয়েছেন, আগে দোষী পুলিশদের শাস্তির ব্যবস্থা করুক রাজ্য সরকার, তার পর অন্য কথা হবে।
অন্যদিকে কর্মীর মৃত্যু ইস্যুতে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘যে কোনও মৃত্যুই দুর্ভাগ্যজনক। আমি সুজন চক্রবর্তীকে সকালে ফোন করেছিলাম। বলেছি, মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।’ পাশাপাশি মৃতের পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার অভিযোগ, বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটলেও মইদুল ইসলাম মিদ্যার পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়নি। কেন এমনটা করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে, ঘটনার তদন্ত নিয়ে তিনি বলেন, ‘পুলিশ দেখছে। আমি কোনও মৃত্যুকে সমর্থন করি না। সুজন চক্রবর্তীকে বলেছি, যে ভাবেই মারা যাক, গরিব পরিবার। তারা চাইলে একজনকে চাকরি দেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মৃত্যুর বিকল্প কখনও সাহায্য হয় না। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।’