বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখতে উডল্যান্ডস হাসপাতালে পৌঁছলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

0
387

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ  গুরুতর শ্বাসকষ্ট নিয়ে আজ দুপুরে আচমকা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। খবর পেয়ে বিকেলেই তাঁকে দেখতে হাসপাতালে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ দুপুরেই বনগাঁয় প্রশাসনিক সভা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। তা সেরে বিকেলের দিকে নবান্নে ঢোকেন তিনি। কিছুক্ষণ থেকেই বেরিয়ে পড়েন উডল্যান্ডস হাসপাতালের উদ্দেশে।


হাসপাতালে বিস্তারিত কথা বলে বুদ্ধবাবুর শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। দেখে আসেন বুদ্ধবাবুকে। এর পরে বাইরে এসে বুদ্ধবাবুর মেয়ে সুচেতনার পিঠে হাত রেখে তাঁকে আশ্বস্তও করেন মুখ্যমন্ত্রী। বুদ্ধবাবুর স্ত্রী মীরাদেবীকে ভাল থাকার চেষ্টা করতে বলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “উনি খুব কষ্ট পাচ্ছেন, আমরা দেখলাম। কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ শরীরে বেশি। উনি দ্রুত সেরে উঠুন।”

ভোটের ময়দানে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে যতই দূরত্ব থাক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু রাজনৈতিক সৌজন্যতা বজায় রেখে চলেছেন। তিন বছর আগে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখতে তাঁর পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতেও পৌঁছে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিত্‍‌সায় কোনও রকম সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন হলে, তাঁকে জানাতেও বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দিয়েছিলেন পাশে থাকার আশ্বাসও। কিন্তু, বুদ্ধদেব সরকারি সাহায্য নিতে রাজি হননি।

দুপুর সওয়া দুটো নাগাদ হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় বুদ্ধবাবুকে। বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী দেখা করার পরে, উডল্যান্ডস কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, বুদ্ধবাবুর জন্য ইতিমধ্যেই মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, তা আরও বড় করা হবে।


দীর্ঘদিন ধরেই বুদ্ধদেববাবুর অক্সিজেনের সাপোর্ট লাগে। বাড়িতে সারাক্ষণই একটি পোর্টেবল অক্সিজেন সিলিন্ডার থেকে নাকে নল লাগানো থাকে তাঁর। গত ১৫ বছর ধরে বর্ষীয়ান সিপিএম নেতার সিওপিডি-র সমস্যা রয়েছে। সেটাই বেশ খানিকটা বেড়ে গিয়েছে বলে খবর। এদিন দুপুরে আচমকা তিনি জ্ঞান হারালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। তবে হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থা এখন স্থিতিশীল রয়েছে।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কোভিড টেস্ট হয়েছিল। বিকেলে তার রিপোর্ট এসেছে নেগেটিভ। তবে ফুসফুসে পুরনো নিউমোনিয়ার কিছু প্যাচ মিলেছে বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা। এখন একাধিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে তাঁর।  হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে। জানা গিয়েছে, এখন বাইপ্যাপে আছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর অক্সিজেন স্যাচুরেশনের মাত্রা ৯৫-এর আশপাশে রয়েছে। পাল্স এবং প্রেশার স্বাভাবিক। ওষুধ চলছে, চিকিত্‍সায় সাড়া দিচ্ছেন তিনি।

গত বছরও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে বেশ কয়েকদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়েছিল। যদিও দিন পাঁচেক থাকার পর এক প্রকার জোর করেই বাড়ি ফেরেন তিনি। তারপর থেকে পাঁচ জন চিকিত্‍সক তাঁকে বাড়িতে দেখতেন।পুজোর সময় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় দেখা করতে গিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে।


কয়েক বছর ধরেই গৃহবন্দি রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। পার্টি আফিসে আসাও ছেড়েছেন অনেকদিন। ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারি মাসে বামেদের ব্রিগেডে গিয়েছিলেন। তবে গাড়িতেই বসে ছিলেন। নামেননি। মিনিট ১৫ থেকেই চলে ফের বাড়ি ফিরে যান। ১৮ ও ১৯-এর পুজোয় তাঁর লেখা দুটি বই ব্যাপক বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এবার আর কোনও বই লেখেননি তিনি।

Previous articleএনআরসি করতে দেব না:‌ গোপালনগরে হুঁশিয়ারি মমতার
Next article‘মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশী’তে সরকারি ছুটি ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর