দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ “বিজেপি ঝড়ের বেগে গুজব ছড়ায়, আমরা ঝড়ের বেগে উন্নয়ন করব।”– মঙ্গলবার, রানিগঞ্জের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এমনই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গেই দাবি করলেন, বিজেপি কুৎসা করে। নিজে মিছিল ডেকে নিজের লোক মারে।
মুখ্যমন্ত্রীর এই আক্রমণ শুনে সকলে ভালই বুঝতে পারছেন তিনি আসলে গতকাল উত্তরকন্যা অভিযানে বিজেপি কর্মী উলেন রায়ের মৃত্যুর দিকে ইঙ্গিত করলেন।
গতকালই শিলিগুড়িতে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি হয় বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে। মিছিলে ৫০ বছরের এক ব্যক্তি মারা যাওয়ার পরে অভিযোগ ওঠে, পুলিশের অত্যাচারে মারা গেছেন তিনি। যদিও আজই ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, শটগান দিয়ে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে তাঁকে। তাতেই মারা গেছেন তিনি। যে শটগানের গুলিতে এ ঘটনা ঘটেছে, সেটা পুলিশ ব্যবহারই করে না বলে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে পুলিশ।
রাজ্য পুলিশ এদিন সকালেই টুইট করে জানায়, “পুলিশ শটগান ব্যবহার করে না। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, গতকাল শিলিগুড়ির বিক্ষোভ মিছিলে সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের আনা হয়েছিল। তারাই গুলি চালিয়েছিল। সেই গুলিই খুব কাছ থেকে লেগে মারা গেছেন ওই ব্যক্তি। এটা খুবই অসাংবিধানিক ঘটনা। মিছিলে অস্ত্র নিয়ে আসার কথা নয়। অস্ত্র ব্যবহার করে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই হিংসা ছড়ানো হয়েছে গতকালের মিছিলে। সিআইডি এই ঘটনার তদন্ত করছে। খুব দ্রুত সামনে আসবে সত্য।”
আজ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসার পরেই স্পষ্ট হয়েছে, পুলিশের গুলিতে মারা যাননি উলেন রায়। কারণ উলেনবাবুর শরীরে আঘাত করা গুলি পুলিশের কাছে থাকারই কথা নয় বলে জানিয়েছে খোদ রাজ্য পুলিশই। এই পরিস্থিতিতে যাবতীয় অশান্তির জন্য বিজেপিকেই দায়ী করেছে তৃণমূল। অভিযোগ, মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে অশান্তি ছড়িয়েছে তারাই।
স্বাভাবিক ভাবেই এর পরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরে। গতকাল পুলিশের অত্যাচারে মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে যতটা চাপে পড়েছিল শাসকদল, আজ মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আসার পাল্টা দাবি পুলিশের তরফে স্পষ্ট হতেই অভিযোগের মুখে বিজেপি।
সেই অস্ত্রই এদিন শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও। তাঁর কথায়, “তুমি ছররা দিয়ে একটা লোককে মেরে প্রোপাগান্ডা করতে চাইছো?” তিনি এদিন সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশেও বলেন, “আমার অনুরোধ, ওরা (বিজেপি) যখনই কোনও কথা বলবে, একটু ক্রস চেক করবেন।”