দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাকরির মেয়াদ ৩১ মে সোমবার ফুরোনোর কথা ছিল। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির কারণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর চাকরির মেয়াদ অন্তত ৩ মাস বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। তা মেনে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এবং তার পর ইতিমধ্যে এই মর্মে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার।
কিন্তু এ সবের মধ্যেই শুক্রবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর দফতর তাঁকে দিল্লিতে বদলি করায় তীব্র সমালোচনা করেছে তৃণমূল। দলের রাজ্যসভার উপ দলনেতা সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে কি এরকম কখনও হয়েছে? একটা রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জোর করে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে পাঠানো হচ্ছে। বাংলায় হারের প্রতিশোধ নিতে চাইছে বিজেপি।
আবার বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে আমলা মহলেও। প্রাক্তন আমলা জহর সরকার টুইট করে এই পদক্ষেপের নিন্দা করেছেন। টুইটে তিনি লিখেছেন, “মোদি-শাহ কি শুরু করেছেন? মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবসরের আগে আর একদিন বাকি ছিল। মুখ্যমন্ত্রী চাইছিলেন তাঁর তিন মাস এক্সটেনশন হোক। ঘূর্ণিঝড়ের ত্রাণ ও পুনর্বাসন এবং কোভিড মোকাবিলা রাজ্য যাতে ঠিকমতো করতে না পারে সে জন্য অন্তর্ঘাত করা হল। বিধানসভা ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে ৪৮ শতাংশ ভোট পড়ার বদলা নেওয়া হচ্ছে”।
Have Modi Shah gone crazy? Just 1 working day left for West Bengal’s Chief Secretary Alapan Bandyopadhyaya to retire — they have transferred him to Delhi! CM wanted 3 months extra. It’s deliberate sabotage of Cyclone Relief, Covid Control + Revenge for 48% Bengal vote against BJP
— Jawhar Sircar (@jawharsircar) May 28, 2021
আবার বর্তমান এক আমলার কথায়, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন কপিবুক অফিসার। তিনি যা করেছেন তা হয়তো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি নিয়ে বা নির্দেশ মতোই করেছেন। আসলে কেন্দ্র-রাজ্য রাজনৈতিক সংঘাতের কারণেই তাঁকে এই ঝঞ্ঝাটের মধ্যে পড়তে হল।
বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনার পর রাজ্যের তিন পুলিশ কর্তাকে দিল্লিতে ডেপুটেশনে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু তখনও নবান্ন সেই নির্দেশ শুনতে চায়নি। ওই তিন অফিসার দিল্লিতে ডেপুটেশনেও যাননি। বরং রাজ্যে তাঁদের পদমর্যাদা বেড়েছে।
সার্বিক এই পরিস্থিতিতে আমলা মহলে এই কৌতূহল তৈরি হয়েছে যে আলাপনবাবু আর এক্সটেনশন নেবেন কিনা। নাকি ৩১ মে অবসর নিয়ে নেবেন! তবে রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ ঘটনার পর নিশ্চয়ই চুপ করে থাকবেন না। কারণ, তিনিও সম্ভবত বুঝতে পারছেন কেন্দ্র তাঁকে চাপে ফেলতে এ সব করছে। ফলে মুখ্যমন্ত্রী কী অবস্থান নেন এখন সেটাই দেখার।