

বিজেপি SIR করে বাংলার উপরে আঘাত হানার চেষ্টা করছে বলে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তিনি থাকতে কেউ পশ্চিমবঙ্গবাসীর গায়ে হাত দিতে পারবে না, জানিয়ে দিলেন তাও। মঙ্গলবার বনগাঁর সভা থেকে বিজেপিকে স্পষ্ট ভাষায় হুঁশিয়ারিও দিয়ে বললেন, ‘বাংলাকে আঘাত করলে প্রত্যাঘাত করব….ভারতবর্ষ হেলিয়ে দেব।’

বনগাঁ : বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “সারা ভারত সরকার বসে থাক। সব এজেন্সি নিয়ে বসে থাক। কোটি কোটি টাকা খরচ করো। টাকা গুঁজে গুঁজে দাও। মানুষ টাকা নেবে, কিন্তু মানুষ ভোট দেবে না। তুমি একবার টাকা দেবে, বছরের পর বছর চলবে কী করে।”
রাজ্যে এসআইআর নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরের মধ্যেই বনগাঁয় সভা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের । মঙ্গলবার বনগাঁর ত্রিকোণ পার্কে সভা থেকে বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনকে তীব্র আক্রমণ করলেন।

এই সভা থেকেই মতুয়াদের অভয় দিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বললেন, “আমরা থাকতে আপনাদের তাড়াতে দেব না। আমি বলছি, আপনারা ভয় পাবেন না।” একইসঙ্গে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে খেলতে এসো না।”

এসআইআর (স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন) প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য মতুয়াদের অভয়বাণী দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এদিন বনগাঁর সভা থেকে মতুয়া সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নাগরিকত্ব নিয়ে ভাববেন না, নিশ্চিন্তে ঘুমোন, আমি আছি।” দেখুন ভিডিও
এসআইআর প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে রাজ্যে দিন দিন বাড়ছে রাজনৈতিক তাপমাত্রা। বিশেষ করে এসআইআর প্রক্রিয়া চালুর পর থেকেই উত্তর ২৪ পরগণার বনগাঁ এলাকা, যা মতুয়াগড় হিসেবে পরিচিত, সেখানকার মানুষদের মধ্যে আতঙ্কের ছবি দেখা যাচ্ছে। এমন আবহে এদিন সেখানে গিয়ে এই বার্তা দেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।

মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, এসআইআর হোক, তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু যেভাবে তাড়াহুড়ো করে এসআইআর এই কাজ করা হচ্ছে, তাতে প্রচুর প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। তাছাড়া এই সময় ধান কাটার কাজে ব্যস্ত থাকে কৃষকরা। যেভাবে ২-৩ বছরের কাজকে ২-৩ মাসের মধ্যে শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে তাতে একদিকে সাধারণ মানুষ যেমন হয়রানির স্বীকার তেমনই বিএলও-দের নাভিশ্বাস অবস্থা হচ্ছে।
এরপরই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের অভয়বার্তা, “ভয় পাবেন না, আতঙ্কিত হবেন না, আমরা থাকতে আপনাদের তাড়াতে দেব না, কেউ আত্মহননের পথ বেছে নেবেন না।”
এরপরই বিজেপি ও কমিশনকে এক বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ তীব্রতর করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন প্রথমে হেলিকপ্টারে বনগাঁর সভায় যাওয়ার কথা ছিল মমতার। কিন্তু, হেলিকপ্টারের বিমা বা ইনস্যুরেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এদিন হেলিকপ্টার ওড়ানো সম্ভব হয়নি। শেষে সড়কপথে বনগাঁ যান তৃণমূল সুপ্রিমো। আর সভাতে সেই প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেন, “প্রথমেই আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিই। আমার আসতে একটু আসতে দেরি হয়েছে। এর পিছনে একটা মজা রয়েছে। মজাটা কী। আমি গত সাত আট মাস হেলিকপ্টার ব্যবহার করি না। গাড়িতেই জেলায় জেলায় যাই। আজকে যেহেতু এখানে একটা সভা রয়েছে। তারপর ঠাকুরনগর যাব। ঠাকুরনগর থেকে ফিরতে হবে।

সরকারের একটা হেলিকপ্টার নেওয়া রয়েছে। আমার বেরনোর আগে হঠাৎ খবর এল, হেলিকপ্টার যাবে না। আমি দেখলাম, দারুণ মজার খবর তো। নির্বাচনই শুরু হল না, তার মধ্যেই কনফ্রন্টেশন শুরু হয়ে গেল। কিন্তু, ওরা বুঝল না, এতে আমার ভালই হল। কারণ, আমি রাস্তায় আসতে আসতে প্রচুর মানুষের সঙ্গে দেখা হয়েছে। আমার জনসংযোগ হল। আমি বিজেপিকে বারবার বলি, ওরে আমার সঙ্গে খেলতে যাস না। আমার সঙ্গে খেলতে গেলে আমি যে খেলাটা খেলব, সেই খেলায় তোমরা আমাকে ধরতেও পারবে না। ছুঁতেও পারবে না। নাগালও পাবে না।”



