দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কলকাতা পুলিশের চতুর্থ ব্যাটেলিয়নে এ বার বিক্ষোভ মাথাচাড়া দিল। কলকাতা সশস্ত্র পুলিশের চতুর্থ ব্যাটেলিয়নের হেডকোয়ার্টার রয়েছে সল্টলেকের ১ নম্বর সেক্টরে। এ দিন বিকেল থেকে সেখানকার পুলিশকর্মীরা প্রবল বিক্ষোভে নেমে পড়েন। ব্যাটালিয়নের মধ্যে তাঁদের কেউ কেউ ভাঙচুর করেন। ইট বৃষ্টিও হয়।
বিক্ষোভরত পুলিশ কর্মীদের অভিযোগ, গত বেশ কিছুদিন ধরে তাঁরা কোনও ছুটি পাচ্ছেন না। করোনা সংক্রমণের মোকাবিলায় তাঁদের ঠেলে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তাঁদের সুরক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। তাঁদের এক সহকর্মী ইতিমধ্যেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকি এক পুলিশ কর্মীকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা কি করোনায় মরব নাকি!’
ব্যাটেলিয়নের হেড কোয়ার্টারে বিক্ষোভের খবর পেয়ে এ দিন বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট থেকে উচ্চপদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। প্রথম পুলিশের বড় বাহিনী সেখানে পৌঁছলে দেখা যায়, আবাসনের গেটের ভিতর থেকে পুলিশ কর্মীরা তাঁদের বিরুদ্ধেও তীব্র সমালোচনা করছেন। কিন্তু পরে অবশ্য সিনিয়র অফিসারদের ভিতরে ঢুকতে দেখা যায়।
এর আগে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের কর্মীরা একই ধরনের অভিযোগ করেছিলেন। এও বলেছিলেন, তাঁদের ক্যান্টিন রয়েছে। কিন্তু খাবারের মান ভাল নয়। মুখ্যমন্ত্রীর সামনেও তাঁরা তাঁদের সমস্ত অসন্তোষের কথা উজাড় করে দিয়েছিলেন। এবং এক পুলিশ কর্তার অপসারণের দাবি জানিয়েছিলেন।
পরে পুলিশি বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে গড়ফা থানায়। সেখানে এক পুলিশ কনস্টেবল করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পুলিশ কর্মীরা অভিযোগ করেন চিকিৎসার অভাবে তাঁদের সহকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। সেই সঙ্গে গড়ফা থানার মধ্যে তাঁরা ভাঙচুর করেন।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, পুলিশের মধ্যে এই বিক্ষোভ ভাল লক্ষণ। এ ধরনের বিক্ষোভের সংক্রমণও দ্রুত ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। সম্ভবত সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী নিজে পিটিএসে গিয়ে পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন।
তবে পর্যবেক্ষকদের এও মত, পুলিশ হল একটি শৃঙ্খলাপরায়ণ বাহিনী। সেই বাহিনীর মধ্যেও সংযমের প্রয়োজন রয়েছে। কোনও অভাব অভিযোগ থাকলে তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তা জানাতে পারতেন। কিন্তু পুলিশই যদি বিক্ষোভে নেমে পড়ে তা হলে সামগ্রিক ভাবে প্রশাসন ও পুলিশি ব্যবস্থা সম্পর্কে ভুল বার্তা যায়। তা না হওয়াই বাঞ্ছনীয়।