দেেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি নিয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ব্লকে ব্লকে সেই কর্মসূচি ছড়িয়ে দিতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। এবার তা ঠেকাতে কোমর বেঁধে নামছে বিজেপি।
রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতাকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানাচ্ছে, জানুয়ারি মাস থেকেই রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের ভুল বোঝানোর রাজনীতির বিরুদ্ধে ময়দানে নামবে বিজেপি। ওই নেতা আরও বলেছেন, প্রচার কেমন হবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পরামর্শে তার ব্লুপ্রিন্টও হয়ে গিয়েছে। এবার শুধু ময়দানে নামার পালা।
রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ সারির নেতার কথায়, তৃণমূল আসলে সংখ্যালঘুদের নিয়ে ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করছে। মানুষের কাছে গিয়ে সেটাই বলবে কর্মীরা। ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আসা প্রায় দেড় কোটি মানুষ নয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সুবিধা পাবেন। যার মধ্যে ৭২ লক্ষ মানুষ বাংলার। বাংলার ৮০টি বিধানসভা কেন্দ্রে উদ্বাস্তু হিন্দুরা নির্ণায়ক শক্তি বলে মনে করছে বিজেপি। একুশের বিধানসভার আগে সেগুলিকেই পাখির চোখ করতে চাইছেন দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়রা।
তবে বিজেপি নেতৃত্ব এ-ও বলছেন, এই প্রচারে এনআরসি নিয়ে কোনও কথা বলা হবে না। ইতিমধ্যেই সারা দেশে এখনই এনআরসি হবে না বলে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর ওই বক্তব্যের পর ঢোক গিলতে হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকেও। গেরুয়া শিবির মনে করছে, এখন যদি আবার এনআরসি প্রসঙ্গ চলে আসে তাহলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হবে। এক বিজেপি নেতার কথায়, “তৃণমূল লাগাতার এই বিভ্রান্তিটাই জিইয়ে রাখতে চাইছে। আমাদের কাজ হবে সেটাকেই দূর করা।”
৪৬ সালের গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং নিয়ে তৈরি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি প্রদর্শনের পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি। মহল্লায় মহল্লায় পর্দা টাঙিয়ে তা দেখানো হবে। পর্যবেক্ষকদের মতে, মেরুকরণকে আরও তীব্র করতেই এই প্রচার কৌশল নিচ্ছে বিজেপি। কারণ লোকসভায় মেরুকরণের সুফল মিলেছে বাংলায়। এবার যে ভোটটা মেরুকরণের ভিত্তিতেই হয়েছে তা মেনে নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর মমতা বলেছিলেন, “টোটালটা হিন্দু-মুসলমান হয়েছে।”
এখন দেখার কবে মাঠে নামে বিজেপি। তৃ্ণমূলকে রুখতে কী কর্মসূচি নেয় গেরুয়া শিবির, আর বাংলার শাসকদলই বা কী ভাবে বিজেপিকে ঠেকানোর পাল্টা কর্মসূচি নেয়।