দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: হাথরস–কাণ্ডের প্রতিবাদে আজ, শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিছিল করবেন। কলকাতার বিড়লা তারামণ্ডল থেকে ময়দানে গান্ধীমূর্তি পর্যন্ত এই মিছিল হবে। শুক্রবারই এই ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেস গান্ধীমূর্তির নীচে অবস্থান করে। সেখানে মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রীর শনিবারের মিছিলের কথা ঘোষণা করেন।
উত্তরপ্রদেশের হাথরসে দলিত মহিলাকে ধর্ষণ ও খুন করার প্রতিবাদে আজ, শনিবার থেকে রাজ্যের সমস্ত ব্লকেও বিক্ষোভ হবে। কোথাও মিছিল হবে, কোথাও–বা অবস্থান। শুক্রবার তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জি এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। অন্য দিকে, এদিনই সন্ধেয় মাত্র দু’ঘণ্টার নোটিসে তৃণমূলের মহিলা কংগ্রেস ময়দানে গান্ধীমূর্তির নিচে অবস্থান–কর্মসূচি নেয়। মোমবাতি জ্বালিয়ে নির্যাতিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। কলকাতার আশপাশ থেকে বহু মহিলা এই কর্মসূচিতে শামিল হন।
গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে আসেন অনেকে। দলিত মহিলার ওপর বর্বরোচিত আক্রমণের নিন্দা করেন তাঁরা। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, কৃষ্ণা চক্রবর্তী, স্মিতা বক্সি, মালা সাহা, দোলা সেন, মালা রায়, উত্তর কলকাতার মহিলা সভাপতি সোহিনী মজুমদার, দক্ষিণ কলকাতার চৈতালি চট্টোপাধ্যায়, কেয়া দাস, সুপর্ণা দত্ত এবং ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর সোমা চৌধুরিরা সকলেই বক্তব্য পেশ করেন। চন্দ্রিমা বলেন, ‘দলিতরাই ভোট দিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন। অথচ তাঁদের ওপরেই অত্যাচার চলছে। এটা আমরা মেনে নেব না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন।’ শশী পাঁজা ও মালা রায় বলেন, ‘এই বর্বরোচিত ঘটনার বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে আরও প্রতিবাদ হওয়া দরকার।’
কৃষকদের আয় তিন গুণ বেড়েছে: মমতা
‘কৃষকেরা আমাদের সমাজের মেরুদণ্ড। তাঁদের পাশে আমরা ছিলাম। আগামী দিনে কৃষকদের স্বার্থে সব সময় সরব থাকব।’ শুক্রবার টুইট করে এ কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি এদিনই দলের বিধায়কদের বৈঠকে কৃষি–বিল নিয়ে আলোচনা হয়। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এলাকায় গিয়ে বিজেপি–র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। কৃষি–বিল নিয়ে মানুষকে বোঝাতে হবে। বলতে হবে, কৃষকদের স্বার্থে এই বিল নয়, আপনাদের সর্বনাশের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিভিন্ন ব্লকে প্রতিবাদ–সভা শুরু হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘এই ৯ বছরে বাংলায় আমাদের কৃষকদের আয় ৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১১ সালে গড় বার্ষিক আয় ছিল ৯১ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা। আমরা কৃষকদের জন্য কী কী উন্নতি করেছি, তা ইতিহাসই বলবে।’
শুক্রবার ছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর জন্মবার্ষিকী। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘৫৫ বছর আগে তিনি জনপ্রিয় করেছিলেন উৎসাহ–উদ্দীপক স্লোগান জয় জওয়ান, জয় কিসান। এই স্লোগান ছিল আমাদের গর্বিত কৃষক ভাইবোনেদের জন্য। যা–ই ঘটুক না কেন, শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত দেশের কৃষক ভাইবোনেদের পাশে থাকব।’
তৃণমূলের কিসান খেতমজদুর সংগঠন ইতিমধ্যে কৃষি–বিলের বিরুদ্ধে বাংলা জুড়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। কলকাতায় অবস্থান হয়েছে। সংসদে তৃণমূল সোচ্চার হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি বেচারাম মান্না জানিয়েছেন, ‘ঘরে ঘরে গিয়ে আমাদের বোঝাতে হবে কেন্দ্রের এই কৃষক–বিরোধী পদক্ষেপ। আবার আমরা রাস্তায় নামব। মাঠের আলে দঁাড়িয়ে প্রতিবাদ হয়েছে। এবার অন্য ভাবে প্রতিবাদ করব। কেন্দ্রকে কৃষি–বিল প্রত্যাহার করতেই হবে।’
সর্বভারতীয় তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের তরফে কৃষি–বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিলের বিরুদ্ধে যা যা বলেছেন, ভিডিও করে দলের কর্মীদের শোনাতে হবে। এখনও যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছেন না, তাঁরা ভুল করছেন।
বিজেপি এই মিডিয়া ব্যবহার করে মিথ্যে খবর ছড়িয়ে দিচ্ছে। কুৎসা, অপপ্রচার করছে। কোভিড–পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। রাস্তায় নেমে সেভাবে মিটিং–মিছিল করা যাচ্ছে না। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেই মানুষের দরবারে দলকে নিয়ে যেতে হবে। এটা আমাদের একান্ত অনুরোধ। যেখানে বিজেপি মিটিং–মিছিল করবে, সামান্য কয়েকজনকে নিয়ে কোভিড–পরিস্থিতির জন্য সরকারি নিয়ম মেনেই বিভিন্ন এলাকায় মিটিং–মিছিল করুন।