দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দেশজুড়ে আর্থিক সঙ্কট চলছে তার মধ্যেও বাংলায় নতুন শিল্প করার পরিবেশ রয়েছে বলে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বেসরকারি উদ্যোগে অনুষ্ঠিত একটি বাণিজ্য সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী শিলপতিদের উদ্দেশে বলেন, “এখানে জমি তৈরি আছে। চাইলে আপনারা বিনিয়োগ করতে পারেন।” অতীতে বাংলার শিল্প সম্ভাবনার ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে ট্রেড ইউনিয়নের ধ্বংসাত্মক রাজনীতিকেই দায়ী করতেন অনেকে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেন, বাংলায় নেতিবাচক রাজনীতি তিনি বন্ধ করে দিয়েছেন।
গত কয়েক বছরে পর্যটন শিল্প কী ভাবে বাংলায় মাথা তুলেছে তারও পরিসংখ্যান দেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে মমতা বলেন, হোটেল ব্যবসার ক্ষেত্রে বড় বড় বিনিয়োগ আসছে রাজ্যে। গত দু’বছরে ২৯টি বড় হোটেল সংস্থা বাংলায় বিনিয়োগ করেছে। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের ক্ষেত্রেও রাজ্যের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুধু শিল্প-বিনিয়োগের মধ্যেই সীমিত ছিল না মমতার বক্তৃতা। নাম না করে একাধিক বিষয় নিয়ে তোপ দাগেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, “সারা দেশেই শিল্পে একটা অনিশ্চয়তার আবহ তৈরি হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব আকাশ ছুঁয়েছে। এক কেজি পেঁয়াজের দাম ১৪০ টাকা!”
ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা নিয়েও নরেন্দ্র মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “ব্যাঙ্ক কী করবে তা নিয়ে জনমানসে সন্দেহ দেখা দিচ্ছে। কেউ ভরসা করতে পারছেন না। বাড়িতে টাকা রাখলে নোটবন্দি হচ্ছে আর ব্যাঙ্কে টাকা রাখলে লুঠবন্দি হচ্ছে। মানুষ কোথায় যাবে?”
এমনিতেই বিরোধীদের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে তদন্ত এজেন্সিকে লেলিয়ে দেওয়া হয়। এদিনও মমতা বলেন, “এজেন্সির ভয়ে সবাই তটস্থ হয়ে রয়েছে।” বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী নাম না করে আক্রমণ শানান রাজভবনের বিরুদ্ধেও। বলেন, “বাংলায় সমান্তরাল সরকার চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। সেই জন্যই দু’দিনের বিধানসভার অধিবেশন স্থগিত করে দিতে হয়েছে।” এদিনও সকালে বিধানসভার গেটে রাজ্যপালের ১৮ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকা নিয়ে একপ্রস্থ নাটক হয়েছে। তারপর মুখ্যমন্ত্রী ফের আক্রমণ শানানোয় অনেকেই মনে করছেন, এই সংঘাতের বোধহয় শেষ নেই।