দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মনে পড়ে, কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের কথা!
সরস্বতী পুজোর সন্ধেবেলা তাঁকে গুলি করে খুন করেছিলেন দুষ্কৃতীরা। শনিবার সকালে সেই খুনের মামলায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করল রাজ্যের গোয়েন্দা দফতর সিআইডি। সূত্রের খবর, খুনের ষড়যন্ত্রের মুকুলবাবু জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ।
এদিন সকালে উত্তর কলকাতায় জনসম্পর্ক অভিযানে নেমেছিলেন মুকুল রায়। এ ব্যাপারে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে মুকুলবাবু বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো পুলিশ মন্ত্রী। তাঁর নির্দেশেই তো এই চার্জশিট হয়েছে। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলছি, বুকে হাত দিয়ে বলুন, মুকুল রায় কি এই খুন করতে পারেন?”
সত্যজিতের বয়স ছিল খুবই কম। মাত্র ৩৭ বছর। যুব তৃণমূল করার সময়ে শুভেন্দু অধিকারীর অত্যন্ত কাজের নেতা ছিলেন তিনি। উনিশের ভোটের আগে ৯ ফেব্রুয়ারি তাঁকে গুলি করে খুন করা হয়। সে সময়ে বিজেপি বলেছিল, অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে খুন হয়েছেন সত্যজিৎ। আর তৃণমূলে তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, এই খুনের পিছনে মুকুল রায় রয়েছেন। মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল।
তখনই মুকুল রায় আন্দাজ করেছিলেন, হাওয়া খারাপ। লোকসভা ভোটের আগে তাঁকে যেনতেন আটকানোর চেষ্টা চলছে। তাই আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন তিনি। তা মঞ্জুর করেছিল আদালত। তবে আদালত জানিয়েছিল, এক- তদন্ত প্রক্রিয়া সহযোগিতা করতে হবে মুকুল রায়কে। দুই- তিনি নদীয়া জেলায় যেতে পারবেন না।
মুকুলবাবুর ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, তিনি তাই করেছিলেন। এই খুনের ঘটনায় পুলিশ তথা সিআইডি তাঁকে জেরা করার জন্য যতবার ডেকেছে, তিনি হাজির হয়ে গিয়েছিলেন। লোকসভা ভোটের সময়ে নদিয়া জেলাতেও যাননি।
মুকুল রায় ছাড়াও সত্যজিতের খুনের ঘটনায় রাণাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের বিরুদ্ধে আগেই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত অভিজিৎ পণ্ডারি ও আরও একজনের সঙ্গে আগে পরে কথা বলেছিলেন জগন্নাথ।
এদিন সিআইডি চার্জশিট পেশ করার পর রাজ্যে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দলের মুখপাত্রদের কথায়, বাংলায় পুলিশ রাজ চলছে। বিরোধীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো এখানে রুটিনে পরিণত হয়েছে।
এ ব্যাপারে ষোল সালে বিধানসভা ভোটের সময়কার একটি ঘটনার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছে বিজেপি। তাঁদের কথায়, ষোল সালের ভোটের আগে এক তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় মানস ভুইঞাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, খুনের যড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন মানস। পরে দেখা যায়, সেই মানস ভুইঞাঁ শুধু তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তা নয়, তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ হয়েছেন। তাঁর স্ত্রী গীতা ভুইঞাঁ এখন সবংয়ে তৃণমূলের বিধায়ক।