দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সম্ভবত আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই এসে যেতে চলেছে অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড। সব ঠিক থাকলে, প্রথমে বয়স্ক মানুষ ও তার পরে স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়ার পরে এপ্রিল মাসের মধ্যে সাধারণ মানুষ পেয়ে যাবেন টিকা। কিন্তু এখন প্রশ্ন, দাম কত হবে এই ভ্যাকসিনের। সাধারণ মানুষের আয়ত্তের মধ্যে থাকবে তো?
এবার এ প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন পুনের ‘সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া’ সংস্থার সিইও আদর পুনাওয়ালা। অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিনের অ্যাস্ট্রেজেনেকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতে পরীক্ষা চলছে ভ্যাকসিনের। পুনাওয়ালা জানান, এই ভ্যাকসিনের দাম ভারতে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে হবে। অর্থাৎ দুটো ডোজ মোটামুটি হাজার টাকা দাম পড়বে।
বৃহস্পতিবার একটি অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে পুনাওয়ালা বলেছেন, ২০২১ সালের প্রথম দিকেই অক্সফোর্ডের কোভিড ভ্যাকসিনের ৩০ থেকে ৪০ কোটি ডোজ চলে আসবে ভারতে।
এই কথার সঙ্গেই পুনাওয়ালা জানান, সাধারণ মানুষকে এই ভ্যাকসিনের জন্য ৫০০-৬০০ টাকা দিতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, এই ভ্যাকসিন সস্তা দামেই দেওয়া হবে ভারত সরকারকে, ভারতই তাঁদের অগ্রাধিকার। পুনাওয়ালা বলেন, ভ্যাকসিনটি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
পুনাওয়ালার কথায়, “সম্ভবত দু-তিন বছরের মধ্যে প্রতিটি ভারতীয় নাগরিক কোভিডের টিকা পেয়ে যাবেন। এতটা সময় লাগার কারণ শুধু ভ্যাকসিনের জোগান নয়, সেইসঙ্গে বাজেট ও অন্যান্য পরিকাঠামোও রয়েছে। সর্বোপরি প্রতিটি মানুষকে স্বেচ্ছায় টিকা নিতে হবে। ২০২৪ সালের মধ্যে প্রতিটি ভারতবাসী দু’ডোজ ভ্যাকসিন পেয়ে যাবেন বলে আশা করছি।”
এই ভ্যাকসিন কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে আরও একবার প্রশ্ন করা হলে পুনাওয়ালা জানান, এখনও পর্যন্ত অক্সফোর্ট-অ্যাস্ট্রোজেনেকার এই ভ্যাকসিন বয়স্ক মানুষদের শরীরে ভাল কাজ করছে। “এই ভ্যাকসিনের টি-সেল রেসপন্স ভাল, যা দেখে মনে হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে শরীরে। তবে এখুনি নিশ্চিত করে এটা বলা যাবে না, যে কতদিন বজায় থাকবে এর কার্যকারিতা। আমাদের ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে।”
তবে বাচ্চাদের জন্য ভ্যাকসিন পেতে আরও একটু বেশি সময় অপেক্ষা করতে হতে পারে বলে জানান পুনাওয়ালা। তিনি বলেন, “কোভিড বাচ্চাদের জন্য এখনও ততটা ক্ষতিকর হয়ে ওঠেনি। হাম বা নিউমোনিয়া এর চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতি করে। তবে বাচ্চারা করোনার জীবাণু বহন করে ছড়াতে পারে, সে কথা মাথায় রাখতে হবে। ভ্যাকসিন এলে বৃদ্ধদের ও অসুস্থদের আগে টিকা দেওয়া হবে, তার পরেই বাচ্চাদের জন্য ব্যবস্থা করা হবে।”
এখনও পর্যন্ত সেরামের ভাবনা, আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাস থেকে প্রতি মাসে ১০ কোটি করে ডোজ তৈরি হবে ভারতে। তবে কত জন করে পাবেন, তা এখনও স্থির হয়নি। “আমাদের হিসেব বলছে ভারতে জুলাইয়ের মধ্যে অন্তত ৪০ কোটি ডোজ জরুরি। এই সবটাই সেরামে হবে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নই আমরা। এটুকু বলতে পারি, ভারতই আমাদের প্রায়রিটি। তার পরে হয়তো আফ্রিকা, তার পরে অন্য দেশ।”