ট্রাম্পকে হুঁশিয়ারি হাসান রুহানির

0
379

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রতিশোধ,বদলা। ইরানের আনাচ কানাচে ক্ষোভের গনগনে আগুন জ্বলছে। মার্কিন ড্রোন হানায় নিহত ইরানের রেভলিউশনারি গার্ড কোরের কুদস বাহিনীর প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেমানির শেষকৃত্যেও উঠেছিল বদলার দাবি। ‘শয়তান আমেরিকা, নিপাত যাক’ স্লোগানে ভেসে গিয়েছিল ইরানের রাজপথ। আমেরিকার বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ নেওয়ার দাবি তুলেছিলেন ইরানের ধর্মীয় গুরু তথা সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খোমেইনি। ট্রাম্পের হুমকির পাল্টা সোমবার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, ইরানকে হুমকি দেওয়ার স্পর্ধাও যেন না করে আমেরিকা। কারণ তাতে ফল হবে প্রাণঘাতী।

শুক্রবার ভোররাতে বাগদাদ বিমানবন্দরের বাইরে মার্কিন ড্রোন হানায় উড়ে যায় দু’টি এসইউভি। এর প্রথমটিতে ছিলেন ইরানের সামরিক কম্যান্ডার জেনারেল কাসেম সোলেমানি ও আধাসেনা বাহিনী হাশদ-আল-শাবির নেতা তথা সোলেমানির অন্যতম পরামর্শদাতা আবু মহদি আল মুহান্দিস। দ্বিতীয় গাড়িটিতে ছিলেন সোলেমানি ও আল-মুহান্দিসের দেহরক্ষীরা। মোট ন’জনের ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার হয় বিস্ফোরণস্থল থেকে। সোলেমানির মৃত্যুতে ক্ষোভের আগুন দ্বলে ওঠে ইরানে। পোস্টার, ব্যানার নিয়ে আমেরিকা-বিরোধী স্লোগান তুলে বিশাল পদযাত্রা হয় ইরানের রাজপথে। এর পরেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলি খোমেইনিকে বদলার দাবিতে সুর চড়াতে দেখা যায়।

সোলেমানির শেষকৃত্যে হাউহাউ করে কাঁদতে দেখা যায় ৮০ বছরের ধর্মীয় নেতা খোমেইনিকে। শেষকৃত্যে বহু মানুষের ভিড়ের মধ্যে থেকে স্লোগান ওঠে ‘আমেরিকা ধ্বংস হোক’। এই শেষযাত্রায় সরকারি ভাবে সম্প্রচার করা হয়, কেউ যদি ট্রাম্পকে হত্যা করতে পারে তবে ইরানের প্রতিটি নাগরিক এক মার্কিন ডলার করে দেবেন।

রবিবার রাতে ইরান ঘোষণা করে, এই মার্কিন আগ্রাসনের মুখে ২০১৫-র পারমাণবিক চুক্তি আর মানবে না তারা। আমেরিকার চাপে ওই চুক্তি করেছিল ইরান। প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি জানান, যে কোনও মুহূর্তে তাঁর দেশ পরমাণু অস্ত্র বিষয়ক গবেষণা এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ শুরু করে দিতে সক্ষম। এই চুক্তি থেকে ২০১৮ সালেই বেরিয়ে এসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। রুহানির কথায়, ‘‘ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে খুন করেছে আমেরিকা। এর পরেও তারা যুদ্ধের কথা বলছে। এর ফল ভাল হবে না।’’

সোলেমানির মৃত্যুতে ইরান-আমেরিকা ছায়াযুদ্ধের আশঙ্কা আরও তীব্র হয়েছে। শনিবার শিয়া অধ্যুষিত কোম শহরের প্রাচীন ও আতিহ্যবাহী জামকরন মসজিদের উপর যুদ্ধের নিশানবাহী লাল পতাকা উড়তে দেখা যায়। অনেকের মতে, এর অর্থ দেশের জনগণকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা। এর পরেই বাগদাদের মার্কিন দূতাবাস ও বালাড বায়ুসেনাঘাঁটিতে মর্টার হামলার খবর মেলে। আমেরিকার দাবি ইরানই এই হামলা চালিয়েছে।

এরই পাল্টা টুইট করে ইরানের ৫২টি জায়গায় হামলা চালানোর হুমকি দেন ট্রাম্প। টুইট করে তিনি বলেন, ইরান কোনও মার্কিন নাগরিক বা আমেরিকার কোনও সম্পত্তির উপর হামলা করলে আমেরিকা পাল্টা হামলা চালাবে। ট্রাম্পের টুইটের পরে উত্তেজনা আরও বাড়ে। ঘরে-বাইরে সমালোচনার মুখে পড়েন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের হুমকির তীব্র বিরোধিতা করে মার্কিন ডেমোক্র্যাটরা জানান, ইরানের সাংস্কৃতি স্থানগুলিতে হামলা চালিয়ে আদতে নিরীহ নারী-পুরুষ, শিশুদের হত্যা করার কথাই বলেছেন ট্রাম্প, যেটা আসলে যুদ্ধাপরাধের মধ্যেই পড়ে।

Previous articleকুণালের নিশানায় এসএফআই
Next articleফের ভাটপাড়া তৃণমূলের, বিজেপি যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here