গরুপাচার-কাণ্ডে দিল্লিতে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার এনামুল হক

0
819

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বৃহপতিবার দিনভর গরু পাচারের তদন্তে কলকাতার জায়গায় জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। শুক্রবার কাক ভোরে গরু পাচার কাণ্ডের অন্যতম পাণ্ডা মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী মহম্মদ এনামুল হককে৷ সিবিআই সূত্রে খবর, দিল্লি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগেও সিবিআই এনামুলকে গ্রেফতার করেছিল সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কামান্ডান্টকে ঘুষ দেওয়ার মামলায়।


বিএসএফ কর্তা সতীশ কুমারের সূত্র ধরেই এনামুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। গতকাল ফের সতীশ কুমারের সল্টলেকের বাড়ি এবং মানিকতলার এক ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েছিলেন সিবিআই গোয়েন্দারা।

বছর দুয়েক আগেও গরু পাচারের ঘটনায় একবার কেন্দ্রীয় পুলিশ গ্রেফতার করেছিল এনামুলকে।তারপর জামিনে ছাড়া পেয়েছিল। সেপ্টেম্বর থেকে এই তদন্তে হঠাত্‍ই গা ঝাড়া দিয়ে নামে সিবিআই। এনামুলের সঙ্গে এই ঘটনায় আর এক ব্যবসায়ীর আনারুল ইসলামের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে সিবিআই।


সিবিআইয়ের এফআইআরে বলা হয়েছে, বিএসএফের আটক তালিকায় পাচারের সময়ে উদ্ধার হওয়া গরুর বর্ণনাতে কারচুপি করা হত। বড় গরুকেও ছোট মাপের ও ব্রিডের বলে দেখানো হতো। তার পর চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই সেগুলো নিলাম করে দেওয়া হত। সাইজে এই কারণেই ছোট দেখানো হতো যাতে নিলামের মূল দাম কম দেখানো যায়। মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে কাস্টমসের দফতরের কর্তাদের যোগসাজসে সেগুলি নিলাম করা হতো।

এনামুল, আনারুল ও গুলাম মুস্তাফারা নিলামে সেই গরুগুলো কম দামে কিনে নিত। এই কারণেই গরু পিছু ২ হাজার টাকা বিএসএফের একশ্রেণির অফিসারদের দিত তারা, একই ভাবে কাস্টমসের লোকজনকে পাঁচশ টাকা করে দিত।

সিবিআই যে এফআইআর করেছে তাতে মূল অভিযোগ করা হয়েছে বিএসএফের কমান্ডান্টের বিরুদ্ধে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মালদহের ৩৬ নম্বর বাটালিয়নের কমান্ডান্ট ছিলেন সতীশ কুমার। ৩৬ নম্বর বাটালিয়নের অধীনে চার কোম্পানি জওয়ান মোতায়েন থাকে মালদহ ও মুর্শিদাবাদে। সিবিআই জানিয়েছে, ওই সময়ে ২০ হাজারেরও বেশি গরু আটকেছিল বিএসএফ। তাৎপর্যপূর্ণ হল, গরু আটকালেও খাতায়কলমে কোনও পাচারকারীকে গ্রেফতার বা আটক দেখানো হয়নি। কোনও গাড়িও আটক হয়নি। অর্থাৎ ব্যাপারটা এমনই যে গরুগুলি একা একাই যেন সীমান্ত পেরিয়ে ওপারে চলে যাচ্ছিল।


রাজ্যের জায়গায় জায়গায় কেন্দ্রীয় এজেন্সির তল্লাশি নিয়ে গতকালই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, রাজ্যকে না জানিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সি এই কাজ করতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ছিল, “কী প্ল্যান রে বাবা!”,


সিবিআই, আয়কর যখন কলকাতা থেকে বর্ধমান পর্যন্ত তল্লাশি চালাচ্ছে তখন বাংলা সফরে রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অনেকেই বিষয়টাকে জুড়ে দেখতে চেয়েছেন। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া থেকে ফিরে নিউটাউনের হোটেলে বিএসএফ ও সিআরপিএফ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শাহ।শুক্রবার সকালেও একপ্রস্থ বৈঠক হয়। এর মধ্যেই সীমান্তে গরু পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার হল এনামুল।

সিবিআই সূত্রে খবর, এনামুলকে দিল্লির বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসা হবে।

Previous articleমতুয়া ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে দড়ি টানাটানি শুরু দুই ফুলে
Next articleদক্ষিণেশ্বরে পুজো দিয়ে ফের তোপ দাগলেন অমিত শাহ, নিশানা তৃণমূলকেই

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here