দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ বাংলায় যে এ বার সাত দফায় ভোটের দিনক্ষণ আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করতে গিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিলেন, মানুষ যাতে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করতে এ বার কঠোর নজরদারি ও পুলিশি ব্যবস্থা রাখতে চলেছে নির্বাচন কমিশন।

উল্লেখ্য, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এ প্রসঙ্গে একবারও বাংলার নাম উচ্চারণ করেননি। তবে তাঁর ইঙ্গিতেই পরিষ্কার, বাংলায় অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট করাতে নতুন কী কী পদক্ষেপ করতে পারে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, যে সব রাজ্যে স্পর্শকাতর বুথ বা লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে সেখানে পর্যাপ্ত সংখ্যায় বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ওই পর্যবেক্ষকরা কেউই সংশ্লিষ্ট রাজ্যের আমলা হবেন না। তাঁরা হবেন, ভিন রাজ্যের পোড় খাওয়া প্রশাসনিক কর্তা। যাঁদের সুদীর্ঘ প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা রয়েছে। সুনীল অরোরার কথায়, কোন কোন রাজ্যে এ ধরনের পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হবে তা কৌশলগত কারণেই এখন জানানো হচ্ছে না। যেমন যেমন পরিস্থিতি তৈরি হবে, তেমন তেমন এ ধরনের পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হবে।

এ বারের লোকসভা ভোটে যাতে বাংলায় লোকসভা কেন্দ্রওয়াড়ি পুলিশ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়, সে জন্য গতমাসেই কমিশনের ফুল বেঞ্চের সামনে আর্জি জানিয়েছিলেন বাংলার বিরোধী দলের নেতারা। বিশেষ করে বিজেপি নেতারা পুলিশ পর্যবেক্ষক নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরেছিলেন কমিশনের কর্তাদের সামনে। বলেছিলেন, আধা সামরিক বাহিনীকে রাজ্য পুলিশের কমান্ডের অধীনে রাখা যাবে না। ভিন রাজ্য থেকে পুলিশ পর্যবেক্ষক এনে তাঁদের হাতে আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েনের দায়িত্ব দেওয়া হোক। সেই দাবি মেনে নিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে জানান, নির্বাচন কেন্দ্রের স্পর্শকাতরতার ভিত্তিতে জেলা বা রাজ্যস্তরে পুলিশ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হবে। আধাসামরিক বাহিনীর মোতায়েন ও আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির উপর তাঁরা নজর রাখবেন। ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয় সে জন্য তাঁরা প্রশাসন ও পুলিশের মধ্যে সমন্বয়ের কাজ করবেন।

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা রবিবার জানিয়েছেন, এরই পাশাপাশি ভোটের দিন প্রতিটি নির্বাচন কেন্দ্রে স্পর্শকাতর বুথগুলিতে মাইক্রো অবজার্ভার নিয়োগ করা হবে। যাঁরা পোলিং বুথের কার্যকলাপের উপরল নজর রাখবেন। এবং প্রতিনিয়ত জেনারেল অবর্জাভারের কাছে রিপোর্ট দেবেন।

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানান, মানুষ যাতে নির্ভয়ে ভোট গ্রহণ কেন্দ্র পর্যন্ত যেতে পারেন তা সুনিশ্চিত করা কমিশনের দায়িত্ব। এ ব্যাপারে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করতে কমিশনও বদ্ধপরিকর। ভোটারদের মধ্যে কমিশনের প্রতি আস্থা বাড়াতে ভোট গ্রহণের ৪৮ ঘন্টা আগে থেকে এলাকায় আধা সামরিক বাহিনী দিয়ে রুট মার্চ ও এরিয়া ডমিনেশন করা হবে। শুধু বুথের কাছেই আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন থাকবে না। কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রয়োজনে পাড়ায় পাড়ায় ঢুকে রুট মার্চ করবে আধা সামরিক বাহিনী।

তা ছাড়া স্থানীয় স্তরে যে সব দুষ্কৃতী রয়েছে, তাদের ব্যাপক হারে ধরপাকড় করা হবে বলে জানানো হয়েছে কমিশন সূত্রে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here