কীভাবে ছড়িয়ে পড়ত রাজের তৈরি পর্নোগ্রাফি ছবি! শার্লিন, পুনম, স্বপ্না, সাগরিকা , রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি অভিযোগ পর্নোগ্রাফি নিয়ে

0
1613


দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ শিল্পা শেট্টির স্বামী রাজ কুন্দ্রা ধরা পড়েছেন পর্নোগ্রাফি-কাণ্ডে। তবে আজ নয়, এর সূত্রপাত বহু দিন আগে। প্রশাসনের খাতা উল্টোলে দেখা যাবে, মহারাষ্ট্রের সাইবার সেলের কাছে রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি অভিযোগ জমা পড়েছে পর্নোগ্রাফিতে বিভিন্ন মহিলাকে যুক্ত করার জন্য। এমনকি পুনম পাণ্ডে, শার্লিন চোপড়ার মতো অভিনেত্রীর অভিযোগও আগেই পেয়েছে সাইবার সেল!

পর্ন ছবি বানিয়ে ফোনের বিভিন্ন অ্যাপে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে সোমবার মধ্যরাতে মুম্বই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন শিল্পা শেট্টির স্বামী ও ব্যবসায়ী রাজ কুন্দ্রা। পর্ন ছবি বিভিন্ন অ্যাপে ছড়িয়ে দেওয়ার কাণ্ডে মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে রাজ কুন্দ্রার নামই উল্লেখ করেছে মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ। 

রাজের গ্রেফতারির পরেই উঠে এসেছে আরও বহু তথ্য। মুম্বই পুলিশ কমিশনার জানান, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই পর্নোগ্রাফি ছবি তৈরি করে অ্যাপে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ জমা পড়েছিল সাইবার থানায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ মূল চক্রান্তকারী রাজের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯২, ২৯৩, ৪২০, ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

বিভিন্ন অভিযোগ খতিয়ে দেখে জানা যায়, বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে পর্ন কনটেন্টগুলি তৈরি করা হত বিভিন্ন উঠতি অভিনেত্রী ও মডেলদের নিয়ে। তারপর তা বিদেশের কোনও এক ওটিটি প্ল্যাটফর্মে আপলোড করা হত। সাতদিন পরে সেগুলি আপনা থেকেই ডিলিট হয়ে যেত বলে জানিয়েছে পুলিশ। সূত্রের খবর, প্রতিটি পর্ন প্রোজেক্টের জন্য নাকি দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা করে দেওয়া হত মডেল-অভিনেত্রীদের।

ভারতীয় পর্ন ফিল্মের দুনিয়ায় শার্লিন চোপড়া ও পুনম পাণ্ডে এখন বেশ পরিচিত। তাঁরা যখন এত পরিচিত হননি, তখন তাঁদের এই ধরনের কাজ শুরু রাজ কুন্দ্রার হাত ধরেই, এমনই দাবি করেছেন তাঁরা। সেসব তথ্য মুম্বই পুলিশের সাইবার সেলের হাতে থাকলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি এতদিন।

এই গ্রেফতারির পরেই মুখ খুলেছেন একের পর এক অভিনেত্রী-মডেল। একটি ভিডিও সামনে এসেছে, যাতে অভিনেত্রী সাগরিকা সোনা জানিয়েছেন, ২০২০ সালের আগস্ট মাসে তাঁর সঙ্গেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছিলেন রাজ কুন্দ্রা। তখন লকডাউন চলছিল, রাজের পক্ষ থেকে উমেশ কামাত তাঁকে ফোন করেছিলেন। রাজ কুন্দ্রার প্রযোজনায় একটি ওয়েব সিরিজে কাজ করার অফার দিয়েছিলেন। অডিশন দেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন।


সাগরিকা জানিয়েছিলেন, কোভিড আবহে তাঁর পক্ষে অডিশন দিতে যাওয়া সম্ভব নয়। ফলে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অডিশন হয়েছিল। সেখানেই তাঁকে নগ্ন হতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা করতে রাজি হননি বলেই দাবি মডেলের। সাগরিকা জানান, ভিডিও কলে তিন জন ছিলেন। একজনের মুখ ঢাকা ছিল। তিনি রাজ কুন্দ্রা ছিলেন বলেই তাঁর ধারণা।

শুধু তাই নয়। রাজের বিরুদ্ধে বহু আগেই অভিযোগ এনেছেন পর্ন-তারকা স্বপ্না সাপুও। তিনি সাগরিকার সঙ্গে সহমত রেখে জানিয়েছেন, রাজ কুন্দ্রা তাঁকেও ব্যবহার করেছেন পর্ন ব্যবসায়। তাঁর ওপর মানসিক নির্যাতনের অভিযোগও এনেছেন স্বপ্না। সাইবার ক্রাইম শাখায় দায়ের করেছেন অভিযোগও।

২০০৯ সালে রাজ কুন্দ্রার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল শিল্পা শেট্টির। ২০১২ সালে তাঁদের সন্তান ভিয়ানের জন্ম হয়। গত বছর রাজ ও শিল্পা সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম দেন কন্যা সামিশার। কিন্তু ২০১৩ থেকেই নানা অপরাধে নাম জড়াতে থাকে রাজ কুন্দ্রার। আইপিএলে ম্যাচ গড়াপেটা কেলেঙ্কারির অন্যতম মাথা হিসেবে সামনে এসেছিল রাজ কুন্দ্রার নাম।


এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ফের কুন্দ্রার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ দায়ের করে মামলা রুজু হয়। তাতেই সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল রাজকে। তথ্য-প্রমাণ মেলার পরে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

সংবাদমাধ্যমের সামনেই মুম্বই পুলিশের তরফে জানান হয়েছে, পর্নোগ্রাফির শুটিংয়ের খবর পেয়ে তারা প্রথমে সেই স্থান উপস্থিত হন। এপিআই লক্ষ্মীকান্ত সালুংখে মলাড় পশ্চিমের মড়িগাঁওতে অশ্লীল ভিডিওর শুটিংয়ের খবর পেয়ে সেই হোটেলে উপস্থিত হন। শুরুতে সেই সমস্ত ছবি বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পেজের মাধ্যমে রাজের নেতৃত্বে ছড়িয়ে দেওয়া হত। এই খবর পেয়েই তদন্ত শুরু করে মুম্বইয়ের ক্রাইম ব্রাঞ্চ প্রপার্টি সেল। 

সেখানে অভিযুক্তদের প্রাথমিক তদন্তের পর প্রচুর মোবাইল ফোন হাতে পান পুলিশ। অভিযুক্তরা হোথিত মুভিজ নামের একটি অ্যাপের কথা ফাঁস করেন পুলিশের কাছে। রাজের নেতৃত্বে শুট করা সমস্ত পর্নোগ্রাফি ছবি এই অ্যাপে আপলোড করা হত। সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে অ্যাপে লগ ইন করলে তখন দেখা যেত বিভিন্ন পর্নোগ্রাফি ছবি। প্রাথমিক তদন্তের পর বহু তথ্য সংগ্রহ করেছে মুম্বই পুলিশ। 

এবার পর্ন-কাণ্ডে গ্রেফতার হলেন তিনি। আজ, মঙ্গলবার সকালে মেডিক্যাল চেক-আপের পর মুম্বইয়ের আদালতে তোলা হয় রাজ কুন্দ্রাকে। আজ সকালে রাজ কুন্দ্রার সহযোগী রায়ানকে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশ। তিনিও এই চক্রের অন্যতম মাথা বলে অভিযোগ। আদালতে তোলা হয় তাঁকেও। তবে দুজনেরই জামিনের আবেদন খারিজ করে পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারপতি।

Previous articleঅলিম্পিকের রঙে রাঙিয়ে তোলা হল হাওড়া ব্রিজকে,কেন ?জানুন!
Next articleউচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দিতে নিষেধাজ্ঞা কলকাতা হাইকোর্টের

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here