দেশের সময়, উত্তর২৪ পরগনা: কর্মক্ষেত্রের কোনো জায়গায়ই পিছিয়ে নেই মহিলারা। এমনকি ঢাক কাঁধে নিয়ে বাজনা বাজিয়েও রোজগার করতে দেখা যায় বহু মহিলাকে। কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে মহিলাদের মত এই মহিলা ঢাকিরাও যথেষ্টই সম্মানের দাবি রাখেন। আর তাই এবার সর্বপ্রথম উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরে ঢাকি শিল্পীদের নিয়েই গড়ে উঠলো তাদের নিজস্ব সংগঠন ৷ মছলন্দপুর ভূদেবস্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ের মঞ্চে কয়েক হাজার ঢাকি শিল্পীদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সুচনা হয় আই এন টি টি ইউ সি ঢাকি সম্প্রদায় সংগঠন।
২১ জনের কমিটি করে শুরু হচ্ছে এই ঢাকি সম্প্রদায় সংগঠনের কাজ। এই সংগঠনে মছলন্দপুর, হাবড়া, অশোকনগর, গোবরডাঙ্গা, বনগাঁ সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার ঢাকি শিল্পীদের একত্রিত করে, এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ।
ঢাকি সম্প্রদায় শিল্পীদির বেশির ভাগই বিভিন্ন পেশায় যুক্ত হয়ে কর্ম চালায়। কয়েক বছর ধরে এই শিল্পের সাথে অনেকেই যুক্ত হতে থাকেন। কিন্তু ঢাকি শিল্পীরা সেভাবে সম্মান পান না বলেই জানালেন সংগঠনের সদস্যরা। অন্যান্য শিল্পের সাথে যুক্ত ব্যক্তিরা যদি সম্মান পান, তবে কেন ঢাকি শিল্পীরা যোগ্য সম্মান পাবেন না, এই দাবি নিয়ে তারা অতীতে বহুবার সরব হলেও, তেমন ভাবে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এই শিল্প কে বাঁচিয়ে রাখতে সংগঠনের দরকার ছিল।
এরপর পঞ্চায়েত প্রধান ও গাইঘাটা দক্ষিণ ব্লক সভাপতি তাপস ঘোষ , হাবড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অজিত সাহার হস্তক্ষেপে অবশেষে মেলে অনুমোদন। ঢাকি শিল্পের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের নানান সমস্যার কথা, পাশাপাশি সুবিধা অসুবিধার কথাও তুলে ধরতে পারবেন এই সংগঠনের মাধ্যমে ।
এর মাধ্যমে ঢাকি শিল্পীদের বিশেষ স্বীকৃতিও মিলবে এমনটাই মনে করছেন ঢাকি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার মানুষ। এদিন কয়েক হাজার ঢাকি সম্প্রদায় শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠান করে শুভ সুচনা হয় সংগঠনের। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাবড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অজিত সাহা, পঞ্চায়েত প্রধান ও গাইঘাটা দক্ষিণ ব্লক সভাপতি তাপস ঘোষ সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
এই প্রসঙ্গে হাবড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অজিত সাহা জনান, “বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঢাক বাজিয়ে প্রায় তিনশ মহিলা ঢাকি রোজগার করতেন কিন্তু, সেভাবে তাঁরা কখনোই সম্মান পাননি । ঢাকি শিল্পীদেরকে এক ছাতার তলায় এনে একটি সংগঠন তৈরী করে তাঁদেরকে আরও বেশি করে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন রকম সুযোগ-সুবিধা যাতে তাঁরা পান তার প্রচেষ্টা করা হবে৷ কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার এই সমস্ত প্রান্তিক মহিলাদের জন্য বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেন ,সেই মতো আমরা এই শিল্পীদেরকে সংগঠিত করে তাদের উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি৷
এক ঢাকি শিল্পীর কথায়, আমরা সংগঠিত হতে পেরে খুব খুশি ও আনন্দিত।” এবার মিলবে যোগ্য সম্মান, আশা ঢাকি শিল্পীদের।