দুয়ারে মমতা! আদিবাসী গ্রামের হাতা-খুন্তি নেড়ে খোঁজ নিলেন তাঁদের

0
1799

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মঙ্গলবার বোলপুরে মেগা রোড শো করেছেন। বুধবারই তাঁর কলকাতা ফিরে আসার কথা। তার আগে বুধবার হঠাৎ করেই বোলপুর লাগোয়া বল্লভপুর গ্রামে আদিবাসী পাড়ায় চলে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একেবারে আচমকা। ঢুকলেন চায়ের দোকানে। খুন্তি হাতে রান্না করলেন নিজেই। খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে হাতের নাগালে পেয়ে খুশি সাধারণ মানুষ। জানালেন ছোটখাটো আবদারও কথা বললেন সেখানে বসবাসকারী পরিবারগুলির সদস্যদের সঙ্গে। একটি দোকানে ঢুকে উনুনে বসানো কড়াইয়ে খুন্তি দিয়ে নেড়ে দিলেন আলু বরবটির তরকারি।


ক্যানেল পাড় ধরে সোজা এগোলে সোনাঝুড়ির হাট ছাড়িয়ে বল্লভপুর গ্রাম। বেশ কিছু আদিবাসী পরিবারের বাস সেখানে। বুধবার দুপুর ১২ টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎই চলে আসেন এখানে। ঘরের সামনে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। হতদরিদ্র পরিবারগুলির বহু সদস্য তখন কাজের জন্য বেরিয়ে গেছেন ঘরে তালা দিয়ে। আশেপাশেই ছিলেন যাঁরা, ছুটে আসেন।

ভাবে এক্কেবারে প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নতুন নয়। গত লোকসভা ভোটের আগেও কোনও দোকানে বা বাড়িতে গিয়ে এ ভাবে সাধারণ মানুষের ভিড়ে তাঁর মিশে যাওয়ার ছবি দেখা গিয়েছে। অতি সম্প্রতি বাঁকুড়ার একটি আদিবাসী গ্রামেও গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। খাটিয়ায় বসে শুনেছিলেন সেখানকার মহিলাদের অভাব-অভিযোগ। অমিত শাহ দু’বার রাজ্য সফরে এসে আদিবাসী-দলিত বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করেছেন। তবে সেটা আগেভাগে জানিয়ে। তা নিয়ে প্রায় প্রতিটি সর্মসূচিতে কটাক্ষ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে বুধবার মমতার এই গ্রামসফর ছিল একেবারেই আচমকা


বাড়ির মহিলাদের ডেকে তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার খবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি সমস্ত পরিষেবা তাঁরা ঠিকমতো পাচ্ছেন কি না তাঁর খোঁজ নেন। গ্রামের কয়েকজন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুযোগ করেন পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে গ্রামে। একটাই পুকুরে সব কাজ সারতে হয়। জানতে পেরে মুখ্যমন্ত্রী তলব করলেন জেলাশাসককে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য নির্দেশ দেন।

গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, আবাস যোজনায় অর্ধেক হয়ে তাঁদের ঘরের কাজ থমকে গিয়েছে। এই সমস্যার সমাধানেরও আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। গ্রামের ভিতর কয়েকটি বাড়ি ঘুরতে ঘুরতে মুখ্যমন্ত্রী ঢুকে পড়েন গ্রামেরই একটা ছোট্ট খাবারের দোকানে। সেখানে তখন রান্না হচ্ছিল। কড়াইয়ে চাপানো আলু বরবটির তরকারি। খুন্তি দিয়ে নাড়তে শুরু করেন তিনি। কথা বলতে থাকেন দোকানের মালিকের সঙ্গে।

গোটা জেলার ভোটারদের একটা বড় অংশ আদিবাসী। তাই বীরভূমে আদিবাসী ভোট একটা বড় ফ্যাক্টর।  ভোটের মুখে জেলা সফরে এসে এই অঙ্ক বুঝেই এদিন তিনি আদিবাসী পাড়ায় গিয়েছিলেন  বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এছাড়া কেরিয়ারের শুরু থেকেই বারবার রাজ্যের মানুষের কাছে নিজেকে ঘরের মেয়ে হিসেবে তুলে ধরতেই ভালবাসেন তিনি। এখন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও সেই ধারাই বজায় রাখছেন একেবারে নিজস্ব ভঙ্গীতে।

Previous articleকলকাতা শহরে মিলল করোনার নয়া স্ট্রেন! বর্ষবরণের ভিড় নিয়ন্ত্রণে তত্‍পর রাজ্য সরকার
Next articleনন্দীগ্রাম ভারতের বাইরে নয়, আহতদের দেখতে গিয়ে বললেনশুভেন্দু

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here