দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: মঙ্গলবার রাত ৮ টায় জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ বুধবার থেকে ধাপে ধাপে কয়েকদিনে ঘোষণা করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কথা মতোই কাজ। সরকারের সেই উচ্চাকাঙ্খী প্রকল্পের আওতায় বুধবার বিকেলে প্রথম বড় ঘোষণাটি করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
নির্মলা জানালেন, কোনওরকম বন্ধক ছাড়া ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প এবং উদ্যোগগুলিকে ঋণ দেবে সরকার। গৃহ উদ্যোগগুলিও এই সুবিধা পাবে। এ জন্য ৩ লক্ষ কোটি টাকার তহবিল তৈরি করা হয়েছে। কোনও গ্যারান্টি বা কোল্ল্যাটারাল এজন্য দিতে হবে না। চার বছরের জন্য এই ঋণ দেওয়া হবে। প্রথম এক বছর আসল শোধ করতে হবে না। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের আওতায় ঋণ নেওয়ার সুযোগ পাবে দেশের ৪৫ লক্ষ ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ।
নির্মলা জানিয়েছেন, এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে কিছু সহায়ক ঋণও দেওয়া হবে। যে সব ছোট ও মাঝারি শিল্পে অর্থ সংকট রয়েছে, যারা ব্যাঙ্কের টাকা শোধ করতে পারছে না, তাদের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণের ব্যবস্থা করছে সরকার। যাতে ব্যাঙ্ক থেকে ফের ঋণ নিয়ে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারে।
আবার যে সব ছোট ও মাঝারি শিল্প ভাল ব্যবসা করছে, তাদের আরও উৎসাহ দেওয়ার জন্যও সরকারের ঝুলিতে কিছু উপকরণ রয়েছে। নির্মলা জানিয়েছেন, যে সব ছোট ও মাঝারি শিল্প সক্ষম, যারা ব্যবসায়িক ভাবে সফল, কিন্তু কোভিডের কারণে আক্রান্ত বা সমস্যায় পড়েছে, তাদের জন্য একটি তহবিল তৈরি করা হচ্ছে। এই ফান্ডস অব ফান্ডের মাধ্যমে ৫০ হাজার কোটি টাকা তাদের ইক্যুইটিতে ঢালা হবে। এর মধ্যে থাকবে মাদার ফান্ড এবং কিছু ডটার ফান্ড।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, মাইক্রো, স্মল ও মিডিয়াম উদ্যোগ তথা এমএসএমই-র সংজ্ঞাও সরকার বদল করছে। যাতে আরও বেশি সংখ্যক উদ্যোগকে এর আওতায় আনা যায়। তিনি বলেন, যে হেতু এই ক্ষেত্র সরকার থেকে কিছু আর্থিক ছাড় পায় তাই সেটা নিরন্তর পাওয়ার জন্য অনেকেই ব্যবসার বহর বাড়াতে চান না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী চাইছেন এরা আরও বড় করে ভাবুক লোকাল থেকে গ্লোবাল হয়ে উঠুক। সেই কারণেই এমএসএমই-র সংজ্ঞা বদল করা হচ্ছে।
তা কীরকম?
নির্মলা জানিয়েছেন, প্রথমত উৎপাদন ক্ষেত্র ও পরিষেবা ক্ষেত্রের মধ্যে কোনও ফারাক থাকছে না। নতুন সংজ্ঞায় ১ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করলে এবং ব্যবসার আয়তন ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত হলে তাকে ক্ষুদ্র শিল্প বা উদ্যোগ বলে বিবেচনা করা হবে।
কেউ ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করলে এবং ব্যবসার আয়তন ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত হলে তা ছোট শিল্প বা উদ্যোগ বলে বিবেচিত হবে। আর ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করলে এবং মোট ব্যবসা ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত হলে তাকে তা মাঝারি উদ্যোগ বলে বিবেচনা করা হবে।
এখানেই থামেননি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পকে আরও সুবিধা দেওয়ার কথা সরকার ভেবেছে। তা হল, ২০০ কোটি টাকা পর্যন্ত সরকারি কেনাকাটায় গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা যাবে না। ঘরোয়া ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পকে সেই সুযোগ দিতে হবে।