দেশের সময়ঃ—বিজেপির আসন এবার অন্য রাজ্যগুলি থেকে কমতে চলেছে।উত্তরপ্রদেশ তো বটেই,এমনকী বিজেপি শাসিত আর রাজ্যে বিজেরির লোকসভার আসন কমার সম্ভাবনা,কয়েক দফার ভোটের পরই বিজেপির কেন্দ্রীয় নের্তৃত্বের কাছে এরকম রিপোর্ট এসেছে,তবে সেই রিপোর্টে একটি তাত্পর্যপূর্ণ ইঙ্গিত হল এবার পশ্চিম বঙ্গে বিজেপি বেশ ভাল ফল করতে পারে।এ রাজ্যে প্রথম দুই পর্বে যে যে আসনে ভোট হয়েছে সেখানে বিজেপির দিকেই পাল্লা ভারি বলে বিশেষ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।আর এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই বিজেপি এবার অন্য রাজ্য গুলি থেকে আসনের যে ঘাটতি হবে তা পুষিয়ে নিতে বাংলাকে টার্গেট করেছে।এই জন্য এ রাজ্যে প্রধানমন্ত্রীর বার বার প্রচারে আসা,এবং এ রাজ্যের শাসক দলকে একেবারে খুল্লাম-খুল্লা আক্রমণ করা।প্রধানম্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ রাজ্যে প্রচারে এসে যে ভাবে তাঁর দলের কর্মীদের চাঙ্গা করতে চেষ্টা করছেন,ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন তাতে পরিষ্কার এ রাজ্যকে বিজেপি এবার বিশেষ গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে।গুরুত্ব দেওয়ার কারণও একটাই বিশেষ নির্বাচনি সমিক্ষায় ধরা পড়ছে এ রাজ্যের মানুষ শাসক দলের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্ধ হয়ে এবার বিজেপির দিকেই ঝুঁকছেন।এ রাজ্যের রাজনৈতিক সমীক্ষকদের একাংশও এই মতের সঙ্গে সহমত পোষণ করছেন,তাঁদের মতে,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এ রাজ্যে কিছু নাগরিক পরিষেবার উন্নয়ন ঘটিয়েছেন,তাতে কোন সন্দেহ নেই,কিন্তু তারই পাশাপাশি এই আমলে দুর্নীতি লাগামছাড়া হয়েছে,বেড়েছে স্বজন পোষণ,আর রাজনৈতিক আগ্রাসন মাত্রাতিরিক্ত হয়েছে।এখন দলীয় আনুগত্য ছাড়া অভিনয় করা যায় না,সাংবাদিকতা করা যায় না,চাকরী মেলে না,দৈনন্দিন জীবন-যাপন করাও সম্ভব হয় না।আগের আমলে এসব ছিল না তেমনটা নয় কিন্তু সেটা এতটা লাগামছাড়া ছিল না,আর এই সব কারণেই এ রাজ্যের একটা বড় অংশের মানুষ বর্তমান সরকারের প্রতি রুষ্ঠ।রাজ্যজুড়ে শুধুমাত্র দলীয় আনুগত্যের কারণে যেভাবে একশ্রেীর অযোগ্য মানুষ করে কম্মে খাচ্ছেন তাতে একটা বড় অংশের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে আর সেই ক্ষোভ এবার ভোট বাক্সে জমা হতে পারে বলেই অনেকের ধারনা।বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারাও এই আঁচ পেয়ে এ রাজ্যকে টার্গেট করে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।তারা সাধারণ মানুষের কাছে মমতা সরকার বিরোধী ভাবনাটাকে উসকে দিতে বার বার মোদী ও অমিত শাহকে এ রাজ্যে এনে প্রচার চালাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।মোদী ও অমিত শাহ যে এ রাজ্যে এতটা সময় ব্যয় করছেন তার কারণ তাদের কাছেও খবর আছে এবার এ রাজ্য তাদের কিছু বাড়তি দিতে পারে।

মোদী ভালই জানেন যে প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোট এবার অনেক জায়গাতে তাদের বিরুদ্ধে যাবে,কারণ তারা ক্ষমতায় ছিলেন,কিন্তু এ রাজ্যে প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোট তাদের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশী,কারণ ক্ষমতায় থেকে মমতা যে ভাবে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে কেড়ে নেবার চেষ্টা করছেন তা মানুষ ভালভাবে নিচ্ছে না,তাই প্রচারে মোদী বার বার বলছেন এ রাজ্যের সরকার সংবিধান মানে না,দেশের কাঠামোকে সম্মান করেনা,এমনকী মমতাকে দেশবিরোধী বলে প্রচার করতেও ছাড়ছেন না মোদী.সব মিলিয়ে বেশ বোঝা যাচ্ছে বিজেপি এ রাজ্যকে একেবারে টার্গেট করেই এগুচ্ছে।তাঁর বিরুদ্ধে যে একটা চোরা স্রোত রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে তা বুঝতে পেরে মমতাও মাটি কামড়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে,তবে এটা মানতেই হবে এ রাজ্যে বাম ও কংগ্রেসকে একেবারে দুর্বল করে দিয়ে মমতা কিন্তু একদিক থেকে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে এনেছেন।এখন তার একটাই সম্বল ভোট নিয়ন্ত্রন করা,এ কাজে তিনি অনুব্রত ও শুভেন্দুদের যথাসম্ভব ব্যবহারও করছেন,কিন্তু মানুষ ঘুরে গেলে শুধু ভোট নিয়ন্ত্রন করে কী আর পতন আটকান যাবে,সে প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে ২৩ মে।তবে তার আগে শুধু এটুকুই বলা যায় এবার অন্য জায়গার ঘাটতি মেটাতে বিজেপির লক্ষ্য বাংলা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here